একা ঋষভ পন্থে রক্ষে নেই, ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন বিতর্ক নিয়ে আবির্ভাব হল যশপ্রীত বুমরার। পন্থ কবে সুস্থ হবেন, আদৌ খেলতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে জল্পনা তো চলছেই। তার মাঝে বুমরাকে নিয়ে যে ভাবে মুখ পুড়ল বোর্ডের, তাতে অনেকেই হতবাক। তা-ও আবার বিতর্ক হচ্ছে নতুন নির্বাচক কমিটি দায়িত্বে আসার ক’দিন পরেই।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে এক দিনের সিরিজ়ের দলে ছিলেন না। ছ’দিন আগে হঠাৎই তাঁকে দলে নেওয়া হয়। সোমবার আচমকাই ছেঁটে ফেলা হল দল থেকেই। তা হলে নেওয়া হল কেন? কেনই বা বাদ দেওয়া হল? স্বাভাবিক ভাবেই নির্বাচকদের তরফে কোনও উত্তর নেই। একটি ছোট বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বুমরার চোট এখনও সারেনি।
তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অবশ্য অন্য। তারা জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজ়ের দল নির্বাচনের আগেই সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন পন্থ। দীর্ঘ দিন রিহ্যাব করেছেন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। ফিটনেস পরীক্ষাতেও পাস করেন। তবু তাঁকে নেওয়া হয়নি। বুমরা তা হলে কবে সুস্থ হবেন সেটা কেউই জানেন না। তাঁকে কি বিশ্বকাপের জন্যেই তৈরি রাখা হচ্ছে? সেটাও বোঝা যাচ্ছে না।
শ্রীলঙ্কা বা নিউ জ়িল্যান্ড সিরিজ়ে বুমরাকে জোর করে খেলানোর অর্থ নেই। এমনকি, অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়েও তাঁকে না পেলে চলবে। কারণ ভারতের হাতে মহম্মদ শামি, মহম্মদ সিরাজ এবং উমেশ যাদবের মতো পেসার রয়েছে। রবি অশ্বিন, রবীন্দ্র জাডেজা এবং অক্ষর পটেলের মতো স্পিনার রয়েছে। সে রকম হলে উমরান মালিককেও টেস্ট দলে নেওয়া হতে পারে। যা ইঙ্গিত, তাতে বোঝা যাচ্ছে বুমরাকে তৈরি করা হচ্ছে বিশ্বকাপের জন্য।
কিছু দিন আগেই বোর্ড জানিয়েছে, নির্দিষ্ট ২০ জন ক্রিকেটারকে বিশ্বকাপের জন্য তৈরি রাখা হবে। নিশ্চিত ভাবেই তাতে রয়েছেন বুমরা। বিশ্বকাপের আগে অনেক গুলি এক দিনের ম্যাচ খেলবে ভারত। তার কোনও একটি সিরিজ়ে বুমরাকে নামানো হতে পারে। অথবা তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হতে পারে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে ফিটনেসের প্রমাণ দেওয়ার। এর আগেও বুমরার ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বোর্ড ঝুঁকি নেয়নি। একটি রঞ্জি ম্যাচে শেষ মুহূর্তে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়।
চোটের সঙ্গে বুমরার ‘সম্পর্ক’ খুবই ভাল। ২০১৮-য় বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলে চোট লাগায় তিন সপ্তাহ বাইরে ছিলেন। পরের বছর বিশ্বকাপের পর পিঠে স্ট্রেস ফ্র্যাকচার হয়। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ে খেলতে পারেনি। ইংল্যান্ডে গিয়ে চিকিৎসা করান। অস্ট্রেলিয়ায় ২০২০-২১ সফরে কুঁচকিতে চোট লাগে। চতুর্থ টেস্টে খেলতে পারেননি। এশিয়া কাপের পর থেকেই স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের জন্যে তিনি বাইরে। এই ধরনের চোট সাধারণত সারতেও সময় লাগে।
বুমরা যে এই মুহূর্তে ভারতের সেরা বোলার, তা নিয়ে কারওরই সন্দেহ নেই। ফলে তাঁকে নিয়ে বোর্ড কোনও ঝুঁকিই নিতে চায় না। বুমরার মতো ভারতের কোনও বোলারই বিপক্ষের বুকে ভয় ধরাতে পারেন না। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই সেটা বোঝা গিয়েছে। তা সত্ত্বেও বুমরাকে নিয়ে শিক্ষা নেয়নি বোর্ড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখ পোড়ার পর এ বার শ্রীলঙ্কা সিরিজ়েও একই ঘটনা।