ইন্টারনেটের হাল একেবারেই খারাপ। কিন্তু পরীক্ষা যে তাদের দিতেই হবে। তার জন্য পাহাড় ভাঙা পরিশ্রম করতেও প্রস্তুত তারা। বাস্তবে সেটা করেও দেখাল মিজোরামের (Mizoram) প্রত্যন্ত গ্রামের একদল কলেজ পড়ুয়া। একটু ভালো ইন্টারনেট কানেকশনের জন্য তারা পাহাড়ের চূড়ায় উঠছে। এবং সেখান থেকেই দিচ্ছে সেমিস্টার পরীক্ষা।
আইজল (Aizawl) থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে সাইহা (Saiha) জেলায় অবস্থিত প্রত্যন্ত গ্রাম মাহেরি (Mawhrei)। সেই গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা এতটাই খারাপ যে, মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (Mizoram University) সাত পরীক্ষার্থীকে অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ছুটতে হচ্ছে তেলাও ত্লা (Tlao Tla) পাহাড়ের চূড়ায়।
কিন্তু কীভাবে তারা পাহাড়ে উঠে পরীক্ষা দেয়? জানা যায়, বাঁশ এবং কলাপাতায় তৈরি একটা ছোট্ট ঘর আছে পাহাড়ে। পরিবর্তিত আবহওয়ায় পড়ুয়ারা সেখানেই বসে পরীক্ষা দেন। পরীক্ষা না দিয়ে উপায়ও নেই তাদের। নাহলে যে সার্টিফিকেট মিলবে না। তাই এভাবে নিজেদের জীবন বাজি রেখে পরীক্ষা দিচ্ছেন পড়ুয়ারা।
ওই গ্রামেরই বাসিন্দা মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (Mizoram University) ছাত্র কেএল ভাবেইহ্রুয়াসা এ ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে জানায়, পাহাড়ে ঘেরা একটি গ্রাম মাহেরি। সেখানে ইন্টারনেট সংযোগও একেবারেই দুর্বল। গোটা দেশে যখন ৫জি (5G) পরিষেবার প্রস্তুতি চলছে, তখন মিজোরামের এই গ্রামে এই গ্রামের ভরসা ২জি (2G) পরিষেবা।
গোটা রাজ্যের ২৪ হাজার আন্ডার গ্র্যাজুয়েট (undergraduate) পড়ুয়াদের জন্য জুনে অনলাইনে সেমিস্টার (semester) পরীক্ষার আয়োজন করে এই বিশ্ববিদ্যালয়।
ঠিক এমন একটা সময় এই ঘটনা সামনে এল যখন গোটা দেশে ৫জি (5G) পরিষেবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর এই গ্রামের ১৭০০ মানুষ আজও ২জি (2G) পরিষেবার ভরসাতেই জীবন কাটাচ্ছে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে ছাত্রদের কল্যাণে একাধিক সংগঠন এগিয়ে আসে। এন বেইরাসাচাই (N Beirasachai) নামের এক সংগঠনের সদস্য জানান, ‘আজ আমরা দেখতে এসেছি কিভাবে পড়ুয়ারা পাহাড়ের চূড়ায় পরীক্ষা দিচ্ছে। গ্রামে কোনো ৪জি (4G) পরিষেবা নেই। কিন্তু এখানে নেটওয়ার্ক তাও পাওয়া যায়। আমরা সরকারের কাছে এই সমস্যা সমাধানের আবেদন জানাচ্ছি।’