বিদ্যুৎ সঙ্কট কাটাতে নয়া পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। এবার বদলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিলের নিয়ম। এখন থেকে দিন ও রাতের জন্য বিদ্যুতের মাসুল হবে ভিন্ন। দিনে ব্যবহার করা বিলে যেমন ছাড় মিলবে তেমনি রাতে ব্যবহার করা বিদ্যুতের দাম বাড়বে। দিনে ব্যবহার করা বিদ্যুতে অতিরিক্ত প্রায় কুড়ি শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। কিন্তু রাতের বিদ্যুতের জন্য অতিরিক্ত কুড়ি শতাংশ টাকা গুনতে হবে।
ইদানিং প্রবল দাবদাহের জন্য, স্বস্তির খোঁজে সন্ধ্যায় বাড়ছে এসি কুলারের ব্যবহার। ফলে বিদ্যুৎ গ্রিড গুলির ওপর চাপ বাড়ছে। আর এই অতিরিক্ত চাপ টানতে না পেরে প্রায়শই লোডশেডিং হচ্ছে। তাই বাঁধনহারা বিদ্যুৎ ব্যবহারে লাগাম টানতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী আর কে সিং একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, কেন্দ্রের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে অন্তত ৬৫ শতাংশ অজীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা। অজীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ ব্যবহার করার ফলে বাতাসে কার্বনের নির্গমনও কমানো যাবে।
পরিবেশকে উষ্ণায়ন সহ অন্যান্য বিপদ থেকে রক্ষা করার স্বার্থে ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন শূন্য নির্গমনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে। এসি ব্যবহারের ফলে বাতাসে ব্যাপক পরিমাণে কার্বন মিশে যায়। নয়া নীতিতে অতিরিক্ত বিল এড়াতে রাতে এসি কম ব্যবহার হলে কার্বন নির্গমনের মাত্রা কমবে।
নয়া নিয়মে দিনের বেলায় সৌরশক্তি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ পাঠানো হবে ঘরে ঘরে। এই বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ অনেক কম, তাই মিলবে স্বস্তি। রাতের বেলায় ব্যবহার হবে নন সোলার অর্থাৎ তাপ বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ এবং গ্যাস থেকে তৈরি বিদ্যুৎ। সৌরশক্তির তুলনায় এই বিদ্যুৎ তৈরিতে খরচ বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত বোঝা চাপবে উপভোক্তার উপর।
আগামী বছরের এপ্রিল থেকে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ও শিল্পাঞ্চল গুলিতে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে এই নিয়ম। পরের বছর কৃষি ক্ষেত্র ছাড়া গোটা দেশ চলে আসবে এই আওতায়।
অনেকের মতে বর্তমান সময় দিনের বেলায় বাড়ির বেশিরভাগ সদস্যই বাড়িতে থাকেন না। অফিস কাছারি বা স্কুল-কলেজে যান। সেই সময় বাড়িতে থাকেন বয়স্করা। সেই সময় বিদ্যুতের ব্যবহার অনেক কম হয়। কিন্তু বেলা শেষে বাড়ি ফেরার পর একটু স্বস্তির খোঁজে এসির ব্যবহার করেন বেশিরভাগ উপভোক্তাই। আর এই নয়া নিয়ম চালু হলে, সেই সময় গুনতে হবে অতিরিক্ত টাকা। খরচ বাড়বে দেশবাসীর। তবে কেউ কেউ এটাতে খরচ কমবে বলেও আশা করছেন। তবে কোন পথে দিন-রাতের ইউনিটের হিসেব হবে, মিটারের কি বদল হবে?সেসব প্রশ্নের উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি।