গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালালেন হুগলির তরুণ, বাঁচাতে গিয়ে দগ্ধ স্ত্রীও! ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জের?

পুরনো ব্যবসায়িক সঙ্গীর সঙ্গে বচসাকে কেন্দ্র করে নিজের আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা এক তরুণের। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হন স্ত্রীও। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির পাণ্ডুয়ায়। অগ্নিদগ্ধ দম্পতি বর্তমানে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অগ্নিদদ্ধ তরুণের পুরনো ব্যবসায়িক সঙ্গীর খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।

পাণ্ডুয়ার কলিষন্ডা গ্রামের বাসিন্দা আসিফ হোসেন মোল্লার সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেছিলেন খীরকুন্ডি গ্রামের বাসিন্দা অলোক হাজরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, অনেক দিন ধরেই তাঁরা এক সঙ্গে ব্যবসা করতেন। কিন্তু সম্প্রতি ব্যবসায়িক সম্পর্কে চি়ড় ধরে। সূত্রের খবর, অলোকের কাছে ব্যবসার কিছু টাকা পাওনা ছিল আসিফের। অভিযোগ, তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে অলোকের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করতে শুরু করেন আসিফ। সমাজমাধ্যমে অলোকের বিরুদ্ধে পোস্টও করেন তিনি। সেই পোস্ট তাঁকে সরানোর অনুরোধ করা হলেও তোয়াক্কা করেননি বলে অভিযোগ।

এর প্রতিবাদে বুধবার সন্ধ্যায় আসিফের বাড়িতে পৌঁছে যান অলোক। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী মৌসুমী এবং আরও কয়েক জন লোক। সেই সময় আসিফ বাড়িতে ছিলেন না। তিনি সে সময়ে ছিলেন একটি মোবাইলের দোকানে। অভিযোগ, সেখান থেকেই সমাজমাধ্যমে লাইভ শুরু করেন আসিফ এবং পুনরায় বিষোদ্গার করতে থাকেন। পরে আসিফ বাড়ি ফিরলে অলোকের সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয় এই নিয়ে। আসিফের এই ধরনের পোস্টের জন্য সম্মানহানি হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন অলোক।

বচসার ক্রমে তপ্ত হতে থাকে এবং একটি পর্যায়ে নিজের গায়ে পেট্রল ধেরে আগুন জ্বালিয়ে দেন অলোক। সে সময়েই অলোকের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হন স্ত্রীও। এই পরিস্থিতিতে বেগতিক বু‌ঝে সেখান থেকে পালিয়ে যান আসিফ। স্থানীয় বাসিন্দারা দম্পতিকে উদ্ধার করে প্রথমে পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁদের পাঠানো হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁরা।

অলোকদের সঙ্গে আসিফের বাড়িতে গিয়েছিলেন পাপিয়া নন্দী নামে এক মহিলাও। তিনি বলেন, “একজন সৎ মানুষকে দিনের পর দিন সমাজমাধ্যমে লাইভ করে মানসিক নির্যাতন করছিলেন আসিফ। তার বিচার চাইতে গিয়েছিলাম।” অন্যদিকে আসিফও সমাজমাধ্যমে দাবি করেন, তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে অসুস্থ মা-বাবাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। অলোকের কাছে তাঁর প্রায় ছ’লাখ টাকা পাওয়া রয়েছে বলেও দাবি করেন। ইতিমধ্যে আসিফের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত সুপার কল্যাণ সরকার জানান, কোনও ব্যবসায়িক সম্পর্ক থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। লোকজনের সামনেই আগুন লাগিয়ে দেন ওই ব্যক্তি। যেমন অভিযোগ দায়ের হবে, সেই মতো খতিয়ে দেখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.