বরাত জোরে প্রাণে বাঁচল শ্রমিকরা, কাটিং করার সময় ইসিএলের শোনপুর বাজারি প্রজেক্টের ভেঙ্গে পড়া কোল হ্যান্ডেলিং প্ল্যান্টে আগুন

ফের কয়লাখনিতে শ্রমিক সুরক্ষা বড়সড় প্রশ্নের মুখে। ভেঙ্গে পড়া কোল হ্যান্ডেলিং প্ল্যান্টের কাঠামো কাটিংয়ের সময় আচমকাই আগুন লাগল। বরাত জোরে প্রাণে বাঁচলো শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে শ্রমিকরা। রবিবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ইসিএলের সোনপুর বাজারি প্রজেক্টে।

প্রসঙ্গত, গত ১২ অক্টোবর সোনপুর বাজারি প্রকল্পে আচমকাই হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়ে কোল হ্যান্ডেলিং প্ল্যান্ট (CHP)র পুরো কাঠামোটি। ঘটনার বিভৎস্যতা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শ্রমিকরা। জানাগেছে, প্রকল্পের কোল হ্যান্ডেলিং প্ল্যান্টে প্রতিদিন স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিক মিলিয়ে শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। তবে বরাত জোরে ওইদিন প্রাণে বাঁচেন সকলে। রবিবার ওই ভেঙ্গে পড়া সিএইচপি কাঠামো সরানোর জন্য গ্যাস কাটার দিয়ে স্ক্যার্প কাটিংয়ের কাজ চলছিল। দুপুর নাগাদ আচমকাই সেখানের কনভেয়ার বেল্টে আগুন লেগে যায়। কয়লা ভর্তি ছিল কনভেয়ার বেল্ট। তারপর প্রখর রোদের তাপে কয়লা শুকনো হয়ে পড়েছিল। ফলে আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে কনভেয়ার বেল্টে আগুন। বরাত জোরে প্রাণে বাঁচে সেখানে স্ক্যার্প কাটিং করা শ্রমিকরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের ২টি ইঞ্জিন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ইসিএলের বিপর্যয় মোকাবিলা দল। প্রায় ৩ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে কোল হ্যান্ডেলিং প্ল্যান্ট-টি প্রথম চালু হয়। খনিতে উৎপাদিত কয়লা কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে সরাসরি জমা হয় কোল হ্যান্ডেলিং ফানেলে। এবং নিচে দাঁড়িয়ে থাকা ডাম্পারে লোড হয় ওই কয়লা। তারপর ডাম্পার ভর্তি কয়লা পৌঁছে যায় সরাসরি কোল সাইডিংয়ে। শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন আগে প্ল্যান্টটি চালু হলেও প্রয়োজনীয় সংস্কার হয়নি। অথচ নিয়ম অনুযায়ী এটি নিয়মিত সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। সংস্কারের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের চুড়ান্ত গাফিলতিকে দায়ী করেছেন শ্রমিকরা। 

শ্রমিকরা জানান, “দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় বিপদজ্জনক অবস্থায় ছিল। সেফটি বিভাগ এটি বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তারপরও এই প্ল্যান্টটি চালু রাখা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ কয়লা উৎপাদনে সক্রিয় থাকলেও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয়। আধিকারিকদের উদাসীনতাকে দায়ী করে শ্রমিকরা।” প্রায় ৭ মাস  বন্ধ থাকার পর টনক নড়ে ইসিএলের। ওই কোলিয়ারির ভেঙ্গে পড়া সিএইচপি কাঠামো সরানোর উদ্যোগ নেয় ইসিএল। আর তাতেই উঠছে প্রশ্ন। কয়লা উৎপাদনে যখন জোর তৎপরতা। তখন, ভেঙ্গে পড়া সিএইচপি কাঠামো সরাতে সাত মাস সময় লাগল কেন? যদিও শ্রমিকরা পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তবে এবিষয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে চায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.