ভারত কিছু বললে এখন সারা বিশ্ব সে কথা শোনে। প্রবাসীরাই দেশের শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রদূত। নিউ ইয়র্কের অনুষ্ঠানে গিয়ে এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিন দিনের আমেরিকা সফরে গিয়েছেন তিনি। রবিবার (স্থানীয় সময়) নিউ ইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে আমেরিকার প্রবাসী ভারতীয়েরা তাঁকে সংবর্ধনা জানান। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠান থেকেই আগামী দিনে ভারতের অবস্থান, পরিকল্পনা সম্বন্ধে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন মোদী।
নিউ ইয়র্কে উপস্থিত প্রবাসীদের প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন মোদী। বলেছেন, ‘‘প্রবাসীদের গুরুত্ব, ক্ষমতার বিষয়ে আমি শুরু থেকেই শ্রদ্ধাশীল। আপনারা সকলে আমার কাছে ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রদূত।’’ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভারতের অবস্থান প্রসঙ্গে এর পর মোদী বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে বিশ্ব রাজনীতিতে ভারতের গুরুত্ব বেড়েছে। এখন ভারত কিছু বললে সারা বিশ্ব তা শোনে। কিছু দিন আগে আমি যখন বলেছিলাম, এটা যুদ্ধের সময় নয়, সকলে সে কথার গুরুত্ব অনুধাবন করেছিল। বিশ্বের কোনও প্রান্তে যখনই কোনও সঙ্কট দেখা দেয়, ভারত প্রথম সাড়া দেয়।’’ বিভিন্ন সংঘাতে ভারতের অবস্থান কী? মোদী বলেন, ‘‘বিশ্বের উপর চাপ বৃদ্ধি করা ভারতের উদ্দেশ্য বা অগ্রাধিকার নয়। আমরা ভারতের প্রভাব বিস্তার করতে চাই। চাপ বৃদ্ধি করতে চাই না। বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করতে চায় না ভারত। চায় বিশ্বের উন্নতিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে।’’
আগামী দিনে ভারতে অলিম্পিক্স আয়োজন করা হবে, নিউ ইয়র্কের ভাষণে সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন মোদী। তিনি জানান, ২০৩৬ সালের অলিম্পিক্স আয়োজন করার জন্য সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। শীঘ্রই সে বিষয়ে ইতিবাচক বার্তা আসতে চলেছে।
ভারতের ৫জি বাজার আমেরিকার চেয়েও বড়, দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘‘এখন ভারতের ৫জি বাজার আমেরিকার চেয়েও বড় এবং বিস্তৃত হয়ে গিয়েছে। তা হয়েছে গত দু’বছরের মধ্যে। এখন ভারতে তৈরি ৬জি পরিষেবার জন্য কাজ চলছে।’’ আগামী দিনে ভারত নিজস্ব ‘চিপ’ তৈরি করতে চলেছে বলেও আমেরিকায় দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘ভারতে এখন প্রচুর কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা এখন আর সুযোগের জন্য অপেক্ষা করি না। আমরাই সুযোগ তৈরি করি। গত ১০ বছরে প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারত নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।’’
উল্লেখ্য, ২১ সেপ্টেম্বর চতুর্দেশীয় অক্ষের (কোয়াড) বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকায় গিয়েছিলেন মোদী। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বাসভবনে ওই বৈঠক আয়োজন করা হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিস, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিয়ো কিশিদার সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে মোদীর। হয়েছে বাইডেনের সঙ্গে একান্তে বৈঠকও। তার পর নিউ ইয়র্কের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।