আগামী মাসে চালু হচ্ছে ‘বিশ্বকর্মা যোজনা প্রকল্প’, ঘোষণা মোদীর, সবই লোক দেখানো, দাবি বিরোধীদের

লোকসভা নির্বাচনে ওবিসি ভোটের কথা মাথায় রেখে আগামী মাস থেকে ‘বিশ্বকর্মা কৌশল যোজনা প্রকল্প’ শুরুর কথা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লাল কেল্লার প্রাচীর থেকে স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় তিনি জানান, বিশ্বকর্মা পুজোর দিন থেকে ১৩-১৫ হাজার কোটি টাকার ওই প্রকল্প শুরু হবে। তবে ওই প্রকল্পের কথা বাজেটে ঘোষণা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী আজ ওই প্রকল্প কবে থেকে শুরু হবে তা জানিয়েছেন। বিরোধীদের মতে, সরকারের শেষবেলায় কারিগর সমাজের কথা মনে পড়েছে মোদীর। গোটাটাই লোক দেখানো এবং ভোট কেনার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।

দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকের কাছাকাছি হল ওবিসি সম্প্রদায়। সেই সমাজের একটি বড় অংশ ক্ষৌরকার, স্বর্ণকার, রাজমিস্ত্রির কাজ করে থাকে। তাই আজ যে ‘বিশ্বকর্মা কৌশল যোজনা’ শুরুর কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাতে মূলত লাভ হবে ওবিসিদের মধ্যে যাঁরা কারিগরের কাজ করেন সেই সমাজের মানুষের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কোটি কোটি হাত যদি স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে কাজ করে তা হলেই আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছব। আমরা এক হাজার বছর গোলামি সহ্য করেছি। তাই আগামী এক হাজার বছরের জন্য ভারতকে সমৃদ্ধ
করতে হবে।’’

বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, ওবিসি সমাজের সমর্থন পেতে ভোটের ঠিক ছ’মাস আগে ওবিসি কারিগরদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া যায়, এমন একটি প্রকল্প শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। যাতে এদের হাতে সরাসরি অর্থ সাহায্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। তবে সরকারের বক্তব্য, ওবিসি সমাজ ছাড়াও তপসিলি জাতি, জনজাতি ও মহিলারাও ওই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। চলতি বছর বাজেটে ‘বিশ্বকর্মা যোজনা প্রকল্পে’র কথা ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এই প্রকল্পের আওতায় আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি, কারিগরদের প্রশিক্ষণ, আধুনিক প্রযুক্তি ও পণ্যের প্রচার কী ভাবে হয়, তা দেওয়া হবে।

ওবিসিদের পাশাপাশি আজ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত সমাজের যাঁরা শহরে ঝুপড়ি, কলোনি বা ভাড়া বাড়িতে থাকেন, তাঁরা যাতে নিজের বাড়ি বানাতে বা কিনতে পারেন তার জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার প্রকল্পের কথা জানিয়েছেন মোদী। আগামী মাস থেকে শুরু হবে ওই প্রকল্প। আজ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘মূলত যারা স্বীকৃতিহীন কলোনিতে, ঝুপড়ি বা ভাড়া বাড়িতে থাকেন, যাঁদের নিজেদের বাড়ি করার পরিকল্পনা রয়েছে, তাঁদের ব্যাঙ্ক থেকে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া ও ঋণের সুদ বাজার দর থেকে কম রাখার ব্যবস্থা করে দেবে সরকার।’’ মূলত শহুরে মধ্য ও নিম্নমধ্যবিত্ত সমাজের সমর্থন পাওয়ার লক্ষ্যেই ওই পরিকল্পনা নিয়ে এসেছে মোদী সরকার। যদিও কবে থেকে এবং কত টাকার প্রকল্প সে বিষয়ে সরকারের তরফে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। সূত্রের মতে, প্রধানমন্ত্রী শহর আবাস যোজনা প্রকল্প শেষ হচ্ছে এ বছর। সেই প্রকল্পকেই আগামী দিনে চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.