টাইটানের যাত্রীরা মৃত, ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার পরে ঘোষণা আমেরিকার উপকূলরক্ষা বাহিনীর

অভিযাত্রীরা হয়তো বেঁচে থাকতে পারেন! সেই আশায় চলছিল খোঁজ। নামানো হয়েছিল রোবটও। কিন্তু ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার পরেই সেই আশা শেষ হয়ে গেল। টাইটানিকের মতো অতলান্তিক সাগরের গভীরেই সলিল সমাধি হল নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ডুবোযান টাইটানের। ওই যানের সকল অভিযাত্রীকেই মৃত বলে ঘোষণা করল আমেরিকার উপকূলরক্ষা বাহিনী এবং টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে নিয়ে যাওয়া সংস্থা ‘ওশানগেট’।

আমেরিকার উপকূলরক্ষা বাহিনীর রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মউগার বলেন, “টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের ১৬০০ ফুট দূরে ডুবোযান টাইটানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে রোবট। মনে করা হচ্ছে, দুর্ঘটনার সময় ডুবোযানটি ভিতরের দিকে দুমড়েমুচড়ে গিয়েছিল। অভিযাত্রীদের এখনই উদ্ধার করা সম্ভব হবে কি না তা বলা কঠিন। ঘটনাস্থলের পরিবেশ খুবই প্রতিকূল। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা।” অভিযানকারী সংস্থাও এক বিবৃতিতে দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।

কানাডার পূর্বে নিউ ফাউন্ডল্যান্ডের উপকূলে জাহাজ থেকে অতলান্তিকের গভীরে ডুব দিয়েছিল টাইটান। মহাসাগরের গভীরে যেখানে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, অভিযাত্রীদের সেই জায়গা ঘুরে দেখায় টাইটান। ওশানগেট সংস্থার তৈরি ওই ডুবোযান গত রবিবার পাঁচ যাত্রীকে নিয়ে সমুদ্রের ১৩ হাজার ফুট গভীরে নেমেছিল। যাত্রা শুরুর ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায় টাইটান। নিখোঁজ ডুবোজাহাজ উদ্ধারের কাজে নেমেছিল আমেরিকা এবং কানাডার সেনা। উত্তর অতলান্তিক মহাসাগরে চলছিল খোঁজ। ডুবোযানের শব্দ ধরার জন্য শব্দতরঙ্গ যন্ত্রও বসানো হয়েছিল। উপকূলরক্ষী এবং বিমানবাহিনীর সঙ্গে তল্লাশিতে নেমেছিল রোবটও। এই রোবটই টাইটানিকের কাছেই একটি অন্য যানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় এবং পরে আমেরিকার উপকূলরক্ষা বাহিনী সেটিকে টাইটানের ধ্বংসাবশেষ বলেই চিহ্নিত করে। সং‌বাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ডুবোযানটিতে ছিলেন ব্রিটেনের কোটিপতি ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং, পাকিস্তানের ব্যবসায়ী শাহজ়াদা দাউদ এবং তাঁর পুত্র সুলেমান, ওশানগেট সংস্থার মুখ্য আধিকারিক স্টকটন রাশ এবং ফরাসি নাবিক পল হেনরি নারজিওলেট।

১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল মধ্যরাতে হিমশৈলে ধাক্কা মেরে উত্তর অতলান্তিকে ডুবে যায় সে সময়ের অন্যতম বিলাসবহুল যাত্রিবাহী জাহাজ টাইটানিক। মৃত্যু হয় ১৫০০-র বেশি মানুষের। তার পর পেরিয়ে গিয়েছে ১১১ বছর। অতলান্তিক মহাসাগরের প্রায় সাড়ে চার হাজার মিটার নীচে এখনও রয়েছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.