জেলায় পেয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংসদ ও রাজ্যের বিধায়করা। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার সিধো কানহো বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আকাশ পথে পৌঁছান। সৈনিক স্কুলের হেলিপ্যাডে নেমে সোজা পুরুলিয়া সার্কিট হাউসে পৌঁছান। সেখানে অপেক্ষারত কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডক্টর সুভাষ সরকারের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে রাজ্য সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি কোনো অনুষ্ঠান হলে সেই অনুষ্ঠানে স্থানীয় বিধায়ক ও সাংসদদের ডাকা নিয়ম, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই নিয়ম উঠিয়ে দিয়েছে। সিধো কানহো বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠান হচ্ছে। সেই অনুষ্ঠানে জেলার তিনজন বিধায়ক ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও পৌরসভার পুরপ্রধানদের ডাকা হলেও বিজেপির বিধায়ক ও সাংসদদের সেই অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি। বৈঠকে এই নিয়ে নালিশ জানান রাজ্যপালকে। রাজ্যপাল বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলে বৈঠকে আশ্বাস দেন।
বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, “রাজ্যপাল এই রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নিয়মিত পড়াশোনার জায়গায় নিয়ে আসতে চাইছেন, পড়াশোনার বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছেন। সেখানে অন্য কেউ উল্টোপাল্টা প্রশ্ন করতে পারেন না, তিনি ভুল তথ্য দিচ্ছেন।” নাম না করে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি এই অভিযোগ করেন। পাশাপাশি এদিন রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন, গত সাত দিনে ৩ জায়গায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের বাজি তৈরির কারখানাগুলোতে রাজ্যের মদতেই বোম তৈরি হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। পুলিশ যে শাসক দলের হয়ে কাজ করছেন সেই প্রশ্নও তুলেছেন। কয়েক ঘন্টার মধ্যে ৪০ হাজার কেজি বারুদ উদ্ধার হল। এতদিন তা কার নির্দেশে উদ্ধার করা হয়নি? এই প্রশ্ন তোলেন সাংসদ সুভাষ সরকার।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়েও তিনি কটাক্ষ করেন। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলে কটাক্ষ করে বলেন, “নবজোয়ারে এসেও দেখছেন জোয়ার নেই শুধু ভাটা চলছে।” নব জোয়ারের খরচ কোথা থেকে আসছে সেই নিয়োগ প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই খরচ কোন টাকা, কয়লার টাকা, শিক্ষা দুর্নীতির টাকা, না পৌরসভার দুর্নীতির টাকা, না ওনার ব্যক্তিগত টাকা। এদিন রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে সুভাষ সরকার ছাড়াও ছিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম, বিধায়ক নরহরি মাহাতো, বানেশ্বর মাহাতো প্রমুখ।