শুক্রবার ওড়িশার বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনা ফের ভয়াবহতার স্মৃতি উস্কে দিল উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরবাসীর মনে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের ১লা আগস্ট ইসলামপুর শহরের কাছে গাইসাল এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছিল। উত্তর দিনাজপুর জেলার গাইসাল একটি ছোট রেল স্টেশন। সেই স্টেশন আর সেই প্রত্যন্ত এই জায়গার নাম গোটা রাজ্য তথা দেশ জেনে গিয়েছিল দুর্ঘটনার জেরে। গভীর রাতে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছিল অবধ অসম এক্সপ্রেস আর ব্রহ্মপুত্র মেলের। প্রাণ গিয়েছিল কমপক্ষে ৩০০ যাত্রীর। প্রায় দু’দশক পেরিয়ে এসেও সেই বীভৎসতার কথা ভুলতে পারেনি গাইসাল তথা ইসলামপুরবাসী। শুক্রবার ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গাইসালের ভয়াবহতার স্মৃতি মনে পড়ছে ইসলামপুরবাসীর।
ইসলামপুর পৌরসভার তৎকালীন পৌরপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, গতকালের বালাসোরের দুর্ঘটনার কথা জানতে পেরে গাইসালের দুর্ঘটনার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। প্রায় একই রকম ঘটনা। দুটো ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে যে ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটেছিল তার বিবরণ দিতে গেলে এখনো গা শিউরে ওঠে। প্রায় ছয় দিন ধরে আমরা দুর্ঘটনাস্থলেই পড়েছিলাম এবং উদ্ধার কার্যে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলাম। চারিদিকে শুধু মৃতদেহ পড়েছিল সেই স্মৃতি বড়ই কষ্টদায়ক।
অন্যদিকে গাইসাল স্টেশনের কাছে এক চা বিক্রেতা নরেশ দাস বলেন, “কালকের দুর্ঘটনা টিভিতে দেখে গাইসালের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। গাইসালেও এমনই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছিল। রাতের বেলা বিকট আওয়াজ শুনে এসে দেখি ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে। প্রচুর লোক মারা গিয়েছিল। গ্যাস কাটার দিয়ে বগি কেটে মৃতদেহ বের করা হয়েছিল। খুব ভয়ানক অভিজ্ঞতা।
গাইসালের অপর এক বাসিন্দা মহঃ বাধালু বলেন, “গতকালকের ঘটনা টিভিতে দেখে গাইসাল ট্রেন দুর্ঘটনার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সেইসময় একটার উপর একটা বগি উঠে গিয়েছিল। অন্ধকারে ঠিকমতো বোঝা যাচ্ছিল না। উদ্ধার কার্যে আমরাও হাত লাগিয়েছিলাম।”
ইসলামপুরের বাসিন্দা কাজল কুমার মন্ডল বলেন, “বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার খবর দেখে গাইসালের কথা মনে পড়ছে। তখন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিই। শিক্ষকের সাথে গাড়ি করে গাইসালে যাই দুর্ঘটনা দেখতে। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার ভয়াবহতা দেখে আর দেখতে পারিনি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরে এসেছিলাম। তবে এদিন সেদিনের সাক্ষী বহনকারী সকলেরই আশা যে, গাইসাল হোক কিংবা বালেশ্বর, রেল দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিয়ে যেন রেল কর্তৃপক্ষ সজাগ ও সতর্ক থাকে।