যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যের তরফে ‘বিস্তারিত রিপোর্ট’ জমা দেওয়া হল কলকাতা হাই কোর্টে। আদালতের নির্দেশে বৈঠকের পর রাজ্য সরকার ওই রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্টে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুরক্ষাব্যবস্থা আঁটসাঁট করতে একাধিক পদক্ষেপের কথা জানানো হয়েছে।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গত ১৫ অক্টোবর দুপুর ২টায় প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পর রাজ্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য প্রায় ৬৮ লক্ষ ৬২ হাজার ৬৬৩ টাকা বরাদ্দ করেছে। এই অর্থ মূলত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস ও সল্টলেক ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ব্যবহৃত হবে। রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা জোরদার করতে নতুন করে ৩২ জন নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হবে। তাঁদের রাজ্য সৈনিক বোর্ড থেকে নেওয়া হবে।
ওই নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়োগের দায়িত্ব থাকবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের উপর। তবে এর আর্থিক ব্যয় বহন করবে রাজ্য। পাশাপাশি, কলকাতা পুলিশের সাউথ সাবার্বান ডিভিশন যাদবপুর ও সল্টলেক ক্যাম্পাস-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলগুলির নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণে রাখবে। এই দায়িত্বে থাকবেন সংশ্লিষ্ট ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ। রিপোর্টে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে রাজ্য প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পারস্পরিক সমন্বয় বজায় রেখে কাজ করবে। গত ২ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। জখমও হন তিনি। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও যেতে হয়েছিল তাঁকে। যাদবপুরে শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর সময় দুই পড়ুয়াও জখম হন। তাঁদের এক জন চোখে আঘাত পান। অন্য জন চোট পান পায়ে। তার পরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। এর আগে এই মামলার শুনানিতে হাই কোর্ট জানিয়েছিল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান বা সেমিনারে আর কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো যাবে না।

