ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাজ হয়নি! এ বার জঙ্গল ঘিরে আগুন জ্বালিয়ে জ়িনতকে খাঁচাবন্দির কৌশল বাঁকুড়ায়

ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে কাবু করা যায়নি জ়িনতকে। গুলি বাঘিনির শরীরে বিঁধেছে কি না, তা-ই স্পষ্ট নয়। গুলি ছোড়ার পরেই সে আবার জঙ্গলের ভিতর কোথাও লুকিয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতে জঙ্গল ঘিরে আগুন জ্বালিয়ে জ়িনতকে খাঁচাবন্দি করার চেষ্টা চালাচ্ছে বন দফতর।

শনিবার সকালে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ থানার গোঁসাইডিহি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল জ়িনত। বাঘিনির অবস্থান নিশ্চিত হতেই তৎপর হয় বন দফতর। এর পরেই ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বাঘিনিকে কাবু করার বন্দোবস্ত শুরু হয়। বন দফতর সূত্রে খবর, জ়িনত নজরে আসতেই গুলি ছুড়েছিলেন বনকর্মীরা। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। তবে বনকর্মীরা নিশ্চিত, রানিবাঁধ ব্লকের পুড্ডি পঞ্চায়েতের বারুনিয়া ও গোসাঁইডিহি গ্রাম সংলগ্ন জঙ্গলের মধ্যেই কোথাও রয়েছে বাঘিনি। সন্ধ্যা নেমে যাওয়ায় এখন সেই জঙ্গলের চারপাশ জাল দিয়ে ঘিরে জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে বাঘিনি জঙ্গল থেকে বেরোনোর চেষ্টা করলেই তাঁকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বাগে আনা যায়।

গত কয়েকদিন ধরে পুরুলিয়ায় বন দফতরকে কার্যত নাকানি-চোবানি খাইয়েছিল জ়িনত। শনিবার আস্তানা বদলে সে পৌঁছয় গোঁসাইডিহি গ্রামে। ভোরের দিকে বাঘিনির গর্জন শুনতে পেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। এলাকায় তার পায়ের ছাপও দেখা যায়। তা থেকে গ্রামবাসীরা নিশ্চিত হয়েছিলেন, গ্রাম থেকে মাত্র কয়েকশো মিটার দূরে জঙ্গলে লুকিয়ে রয়েছে। বাঘিনির গলায় থাকা রেডিয়ো কলার সিগন্যাল ট্র্যাক করে সেখানে পৌঁছে যান বনকর্মীরাও। তাঁরা জানতে পারেন, গ্রামের অদূরেই মুকুটমণিপুর জলাধার লাগোয়া ছোট জঙ্গলে রয়েছে জ়িনত। এর পরেই দ্রুত গোটা জঙ্গল ঘিরে ফেলা হয় নাইলন দড়ি দিয়ে। গ্রামবাসীদের উপর বাঘিনির হামলা ঠেকাতে গ্রামের রাস্তাও জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। জঙ্গলে একাধিক খাঁচা পাতার পাশাপাশি দু’টি মহিষকেও টোপ হিসাবে রাখা হয়েছিল।

জ়িনতের ভয়ে আতঙ্কিত গোঁসাইডিহি। এর জেরে শনিবার গ্রামের আইসিডিএস কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছিল। পড়ুয়ারা স্কুলমুখো না হওয়ায় দুপুরের পর বন্ধ করে দেওয়া হয় স্থানীয় গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.