স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে যে শয্যায় তাঁকে শুইয়ে রাখা হয়েছিল, সেখান থেকে রক্ত মুছে দিতে হল তাঁর শোকাতুরা স্ত্রীকেই! অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও রেহাই মিলল না। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে মধ্যপ্রদেশের গাড়াসরই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে। ঘটনার একটি ভিডিয়ো ফুটেজও ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, মহিলা নিজেই তাঁর স্বামীর শয্যা পরিষ্কার করতে চেয়েছিলেন।
মধ্যপ্রদেশের আদিবাসী অধ্যুষিত ডিন্ডোরী জেলার লালপুর গ্রামের ঘটনা। বৃহস্পতিবার ওই গ্রামে গুলি চলেছিল। গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন একই পরিবারের চার জন। বাবা এবং তাঁর তিন পুত্রকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাবা এবং এক জন পুত্রের। বাকি দু’জনকে গাড়াসরই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আরও এক জনের। নিহত ওই যুবকের স্ত্রী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাঁকেই দেখা গিয়েছে হাসপাতালের শয্যা পরিষ্কার করতে।
ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, এক হাতে রক্তমাখা কাপড় ধরে আছেন মহিলা। অন্য হাতে টিস্যু দিয়ে হাসপাতালের শয্যা পরিষ্কার করছেন। সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়ার পরেই সমাজমাধ্যমে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভূমিকা সমালোচিত হয়েছে।
বিতর্কের মাঝে কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর্মী এবং নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন। যুবকের মৃত্যুর পর শয্যায় তাঁর রক্ত লেগে ছিল। কিন্তু তাঁর স্ত্রীকে সে সব পরিষ্কার করতে বলা হয়নি। বরং তিনি নিজেই একটি টিস্যু দিয়ে ওই রক্ত মুছতে চান। অত্যধিক রক্তক্ষরণে যে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে, তার প্রমাণ সংগ্রহ করতেই শয্যা পরিষ্কার করতে চেয়েছিলেন ওই মহিলা, দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তাঁরা জানিয়েছেন, মহিলা বা তাঁর পরিবারের তরফেও হাসপাতালে এমন কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।
মহিলার স্বামী-সহ তিন জনকে গুলি করে খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কয়েক জন সন্দেহভাজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জমি নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিবাদের জেরে এই হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান পুলিশের।