নদিয়া জেলায় ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘের ‘অভ্যাসবর্গ’ পালিত হল।

১০ ই জুলাই,কৃষ্ণনগর।কথায় আছে ‘কলিযুগে সঙ্ঘই শক্তি।’ সঙ্ঘবদ্ধ না থাকলে এই যুগে কোনো কাজে সাফল্য পাওয়া প্রায় অসম্ভব। বিশেষ করে কৃষকরা যদি সঙ্ঘবদ্ধ না হয় তাহলে তাদের দাবি আদায় করতে পারবে না – এই ভাবনাকে গুরুত্ব দিয়েই ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘ সারা ভারত জুড়েই কৃষকদের সঙ্ঘবদ্ধ করার কাজ করে চলেছে।

আর সেই সঙ্ঘবদ্ধতার কাজ করতে গেলে কার্যকর্তাদের মধ্যে সংগঠন সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা দরকার। সেই ধারণা দিতেই নদিয়া জেলার কার্যকর্তাদের নিয়ে ‘অভ্যাসবর্গ’ পালন করল ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘের নদিয়া জেলা কমিটির সদস্যবৃন্দ,কৃষ্ণনগর,বিবেকানন্দ ভবনে।। এদিনের কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘের পশ্চিমবঙ্ঘ প্রান্তের সহ-সভাপতি আশিস সরকার এবং বিশিষ্ট উদ্যানবিদ্ ড. ব্যাসদেব চট্টোপাধ্যায়। এই বর্গে সভাপতিত্ব করেন নদিয়া জেলার সহ-সভাপতি সুশান্ত মজুমদার।

এদিন শুরুতে ড. চট্টোপাধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে বর্গের শুভ সূচনা করেন।তারপর আশিস সরকার ভারত মাতা,ভগবান বলরাম ও দত্তপন্থ বাপুরাও ঠেংড়ী’র ছবিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। একে একে অন্যান্য সদস্যরাও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন ছবিতে।

তারপর ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘের উদ্দেশ্য,কার্যপদ্ধতি ও সংগঠন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন আশিস সরকার।তিনি বলেন -“ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘ কৃষকদের সঙ্ঘবদ্ধ করার কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি কৃষকরা যাতে ফসলের লাভকারী মূল্য পান সেই জন্যও আমরা লড়াই করছি। কৃষকই আমাদের অন্নদাতা। তারা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী না হলে দেশ আত্মনির্ভরশীল হবে না।”

এরপর জৈব পদ্ধতিতে চাষ করার জন্য কৃষকদের কীভাবে উৎসাহিত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন ড. ব্যাসদেব চট্টোপাধ্যায়। জৈব চাষের সুবিধা-অসুবিধা তুলে ধরেন তিনি। জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসলই আমাদের বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। বিশেষ করে এই পদ্ধতিতে ফলচাষ নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। ফলচাষ আলোচনায় বিকল্প চাষ হিসেবে মালটা ও ড্রাগন চাষের কথা বলেন ড. চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও নদিয়া জেলার জলবায়ুর নিরিখে শস্য পরিকল্পনা ও শস্যপর্যায় নিয়ে তিনি আলোচনা করেন।

তারপর সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে চাষ করে সফল হয়েছেন, রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার প্রাপ্ত, লক্ষ্মণ প্রামাণিক তার সাফল্যের চাবিকাঠি উপস্থিত কৃষকদের সামনে তুলে ধরেন।

আজকের বর্গ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে নদিয়া জেলার সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের কার্যকারিনী সদস্য মিলন খামারিয়া জানান যে -“একদিনের এই বর্গের মাধ্যমে কার্যকর্তারা ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘের কার্যপদ্ধতি ও সংগঠনের ভিত্তি গুলি সম্পর্কে জানতে পারবে। আর এই জানার মাধ্যমেই তারা কৃষকদের সঙ্ঘবদ্ধ করতে সক্ষম হবে। নদিয়া জেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে সংগঠন গড়ে তোলায় আমাদের মূল লক্ষ্য।”

এদিন কল্যাণী, কৃষ্ণনগর, হাঁসখালি, করিমপুর, রানাঘাট, তেহট্ট, নবদ্বীপ, চাকদাহ, হরিণঘাটা, চাপড়া প্রভৃতি ব্লক ও নগর থেকে ৪৩ জন কার্যকর্তা উপস্থিত ছিলেন এই শিবিরে। কল্যাণ মন্ত্রের মাধ্যমে এই ‘অভ্যাসবর্গ’ শেষ হয়।প্রত্যেক কার্যকর্তার কন্ঠে ধ্বনিত হয় ‘জয় কিষাণ,জয় বলরাম,ভারত মাতা কি জয়’।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন জেলার সহ-সভাপতি বিভাস মোদক ও ব্যবস্থাপনায় সহ-সম্পাদক অর্ণব রায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.