পুলিশকর্মী মাথায় গামছা বেঁধে কোদাল দিয়ে মাটি কাটছেন। কোনও ফিল্মি দৃশ্য নয়। ধান কাটতে যাওয়া হারভেস্টার ও ট্রাক্টরের চাকায় তাল তাল কাদায় রাজ্য সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনা রুখতে তাই পুলিশ কর্মীরাই এ বার উর্দি খুলে কোদাল হাতে রাজ্য সড়ক থেকে কাদা মাটি সরানোর কাজে নেমেছেন। দুর্ঘটনা কমাতে পুলিশ কর্মীদের এমন মানবিক কাজে বাহবা দিচ্ছেন পথচারীরা।
বোরো ধান কাটার জন্য এগরা মহকুমায় দু’হাজের বেশি হারভেস্টার ও ট্রাক্টর ভিন্ রাজ্য থেকে এসে কাজ করছে। মাঠে ধান কাটতে গিয়ে কাদা মাটি হারভেস্টারের চাকায় লেগে থাকছে। মাঠের কাদাপথ পেরিয়ে ট্রাক্টরে ধান আনার সময়েও একই ঘটনা ঘটছে। চাকায় কাদা নিয়ে রাজ্য সড়ক দিয়ে সেই সব হারভেস্টার ও ট্রাক্টরের অবিরাম যাতায়াতে তাল তাল কাদা সড়কের উপর ছড়িয়ে থাকছে। পটাশপুরের তেমাথানি সড়কে এই ছবি সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। রাজ্য সড়কের উপর তাল তাল কাদা পড়ে থাকলেও সেই কাজা সরাতে কারও উদ্যোগ দেখা যায়নি। নরম কাদা রাস্তায় পড়ে থাকায় গাড়িক চাকা পিছলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। তার উপর বৃষ্টি হওয়ায় পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তা কার্যত মৃত্যুফাঁদ হয়ে গিয়েছে।
এগরার জেড়থান ও আলংগিরি রাজ্য সড়ক কিংবা কসবাগোলা থেকে পাঁচরোল রাজ্য সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। পটাশপুরের বাঙ্গুচক মোড় থেকে দেহাটি পর্যন্ত রাজ্য সড়কে কাদাপথে গত কয়েকদিনে একাধিক বাইক ও গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে আলংগিরি ও কসবাগোলা রাজ্য সড়কে। ধান কাটার নামে রাজ্য সড়কে কাদামাটি পড়ে থাকলেও হুঁশ নেই পূর্ত দফতরের। শেষ পর্যন্ত মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দুর্ঘটনা কমাতে পুলিশ কর্মীরাই কোদাল হাতে রাজ্য সড়কে পড়ে থাকা কাদামাটি পরিষ্ককার করতে নেমেছেন। বৃহস্পতিবার দেখা গেল, পটাশপুরে থানার কয়েকজন পুলিশ কর্মী উর্দি ছেড়ে মাথায় গামছা বেঁধে কোদাল হাতে রাস্তা থেকে কাদা ছেঁচে পরিষ্কার করছেন। অমরপুর দুর্গারোড, লক্ষ্মী বাজার, পুষা সহ একাধিক এলাকায় রাজ্য সড়ক থেকে কাদামাটি সরাতে দেখা যায় পুলিশকে। যা দেখে অবাক যানচালক থেকে পথচারী।
এগরা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মহম্মদ বৈদুজামান বলেন, ‘‘পটাশপুর থানা এলাকায় ধান কাটার হারভেস্টার ও ট্রাক্টরের চাকার কাদা একাধিক রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনা কারণ হয়ে দাঁড়ায়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পুলিশ কর্মীদের নিয়ে কোদাল দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করিয়েছেন। গাড়ির মালিকদের এই বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে।’’