করোনার জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১ জুলাই শহরে বাস পরিষেবা চালু হয়েছিল। এবং প্রথমদিনই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সাক্ষী ছিল শহরবাসী। রেড রোডে মিনিবাস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান বিবেকানন্দ ডাব নামক এক পুলিশকর্মী। ঘটনায় জখম হয়েছিলেন বাসে থাকা ১২ জন যাত্রীও। সেই ঘটনার ৩৯ দিনের মাথায় ব্যাঙ্কশাল আদালতে চার্জশিট জমা দিল পুলিশ। চার্জশিটে অভিযোগের আঙুল কার্যত চালকের দিকেই। জানানো হয়েছে বাসে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না, বেপরোয়া গতির জন্য দুর্ঘটনাটি ঘটে।
গত ১ জুলাই বেলার দিকে রেড রোডে নিয়ন্ত্রণ হারায় মেটিয়াবুরুজ থেকে হাওড়া স্টেশনগামী একটি মিনিবাস। ফোর্ট উইলিয়ামের পাঁচিল ভেঙে ঢুকে যায় বাসটি। বাসের নিচে চলে যান বাইক আরোহী পুলিশ কর্মী। দুর্ঘটনার পরই উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন সেনা জওয়ানরা। সাহায্য করেন আশপাশের থাকা মানুষজনও। দুর্ঘটনার তীব্রতা এতটাই ছিল যে মিনিবাসের ভিতরে সামনের দিকের সিটগুলিও দুমড়ে-মুছড়ে যায়। বাসের জানালার কাঁচগুলি ভেঙে যায়। আহত হন বাসের ভিতরে থাকা অন্তত ১২ জন যাত্রী।
বাসের নিচে থাকা পুলিশ কর্মীকে প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট পর্যন্ত সেখান থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। কারণ মিনিবাসটিকে তোলার জন্য সময় মতো ক্রেন পাওয়া যায়নি। তা পাওয়া গেলে হয়তো তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হত। তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে বাসের নিচ থেকে বের করাও সম্ভব হয়নি। তা করতে গেলে হাত-পা ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছিল। তাই ক্রেন আসা অবধি অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় ছিল না। তাতেই হয়ে যায় দেরি। শেষে যখন তাঁকে উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশের অ্যাম্বুলেন্সে করে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। কলকাতা পুলিশের রির্জাভ ফোর্সের কনস্টেবল বিবেকানন্দ পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা ছিলেন। কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে থাকতেন তিনি। এরপরই ঘটনার তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিশের ফ্যাটাল স্কোয়াড ট্রাফিক পুলিশ।