পুলিশই ছিনতাইবাজ! উর্দি পরে ব্যবসায়ীর গাড়ি থেকে কোটি টাকা লুট, ছ’জন গ্রেফতার দুর্গাপুর থেকে

রক্ষকই ভক্ষক! দুষ্কর্ম ঠেকাবেন কি, পুলিশই লুট করল ব্যবসায়ীর টাকা। এমনই অভিযোগে হইচই পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে। দুই পুলিশকর্মী-সহ মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন সাসপেন্ড হওয়া এক পুলিশকর্মীও। যদিও লুটের টাকা এখনও উদ্ধার করা যায়নি।

পুলিশের একটি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লির এক ব্যবসায়ী গাড়িতে প্রায় এক কোটি টাকা নগদ নিয়ে কলকাতার দিকে যাচ্ছিলেন। ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে দুর্গাপুর থানা এলাকায় বেশ কয়েক জন তাঁর গাড়ি আটকায়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পুলিশের উর্দি পরিহিত দু’জন। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তাঁর পরিচয়, গাড়ির কাগজপত্র দেখার পরেও সঙ্গে থাকা এক কোটি টাকা জোর করে কেড়ে নেন অভিযুক্তেরা। তার পরে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। টাকা খুইয়ে সেই ব্যবসায়ী বৃহস্পতিবার রাতেই দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ জানান। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদীকে এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেন।

তবে তদন্তের শুরুতেই কার্যত হতবাক হতে হয় পুলিশকে। জানা যায়, ওই লুটে অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন দুই পুলিশকর্মী। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সাসপেন্ড হওয়া এক পুলিশকর্মী। সব মিলিয়ে ছ’জন এই কুকর্ম করেছেন। প্রথমেই এক অভিযুক্তকে পাকড়াও করেছিল পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও পাঁচ জনকে ধরা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত তিন জন পুলিশকর্মী ছাড়া বাকি তিন জনের সঙ্গে ব্যবসায়ীর চেনাজানা ছিল।

শুক্রবার ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ধৃত ছ’জন ছাড়াও আরও বেশ কয়েক জনের যোগ রয়েছে ওই কাজে। ইতিমধ্যেই সেই অভিযুক্তদের খোঁজ মিলেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই পুরো ঘটনা তারা খোলসা করতে চান না বলে জানিয়েছেন ডিসি। তিনি অভিযুক্তদের নামও এই কারণে বলেননি। অভিষেক বলেন, ‘‘কয়েক দিনের মধ্যেই পুরো গ্যাং আমরা ধরে ফেলব। তখন সমস্ত বিষয়টি জানানো হবে।’’ শনিবার ধৃত ছ’জনকে দুর্গাপুর আদালতে হাজির করানো হবে। পাশাপাশি ওই চক্রে আর কারা রয়েছে, তারা কোন কোন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত, সে সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.