ময়নার বিজেপি নেতা খুনের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পুলিশের অপদার্থতার কারণেই এই খুন হয়েছে বলে দাবি করেছেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর হুঁশিয়ারি “এই সব কিছুর পর পুলিশ হামলার শিকার হলে আমাদের দায়ী করতে পারবেন না। সংবিধান প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়োজনে পুলিশের সাথেও আমরা লড়বো।”
আজ ময়নায় খুন হয়ে যাওয়া বিজেপির বুথ সভাপতির বাড়িতে যান সুকান্ত মজুমদার। নিহতের পরিবারের হাতে দলের তরফে পাঁচ লাখ টাকার চেক তুলে দেন। তিনি বলেন, রাজ্য পুলিশের উপর তাদের কোনো ভরসা নেই।
কারণ খুন হয়ে যাওয়া বিজেপি নেতার ছেলে যখন পুলিশকে গিয়ে বলছে, “আমার বাবাকে আপনারা গিয়ে বাঁচান” পুলিশ বলেছে, আমরা কি তোর চাকর নাকি? তোর বাবাকে বাঁচাতে যাব? সুকান্ত মজুমদারের দাবি, তিন মিনিটে পুলিশ সেখানে পৌঁছাতে পারতো। তাহলে সেই ব্যক্তিকে প্রাণে বাঁচানো যেত, কিন্তু পুলিশ গেল না। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এতকিছুর পরও কি এই পুলিশের উপর ভরসা করা যায়?
তাঁর অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসন এই খুনের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে যুক্ত। পুলিশের সাথে পরিকল্পনা করেই এই খুন করা হয়েছে। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। পা ধরে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে হিন্দি সিনেমার কায়দায় খুন করা হয়েছে। বিজয় ভুঁইঞার স্ত্রী বারবার অনুরোধ করলেও তাকে রড মেরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সুকান্ত মজুমদারের বিস্ফোরক অভিযোগ, এখানে দুটো পুলিশ ক্যাম্প করে রাখা হয়েছে। এই দুটো পুলিশ ক্যাম্প নষ্টের গোড়া। গ্রামবাসীরা বলছেন, এই পুলিশ ক্যাম্পে তৃণমূলের বোমা থাকে। এই পুলিশ ক্যাম্পের মাধ্যমেই বাইরে থেকে দুষ্কৃতি আনা হয়। কেলেঘাই নদী পার করে দুষ্কৃতীদের আনা হয়। প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রর মদতে এই সব ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় দ্বিতীয় বার ময়না তদন্তের দাবি করে আদালতে গিয়েছিল পরিবার। সুকান্ত মজুমদার বলেন, হাইকোর্ট দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের রায় দিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গে যে পুলিশ প্রশাসন রয়েছে, তার উপর বিচার ব্যবস্থার বিন্দুমাত্র আস্থা নেই। প্রশাসনের অপদার্থতার জন্য এই ঘটনা ঘটেছে। আর এমনিতেই তো গোটা রাজ্য চলছে কোর্টের ভরসায়। চাকরি কে দেবে? কোর্ট? চাকরি বাতিল করবে কোর্ট। বিজেপি সভা করবে সেই পারমিশন দেবে কোর্ট। মিছিল করার অনুমতিও দেবে কোর্ট। তাঁর কথায় কোর্ট আছে বলে এখানে কিছু শতাংশ গণতন্ত্র অবশিষ্ট রয়েছে।
সুকান্ত মজুমদার জানান, তিনি এই সমস্ত ঘটনা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর খুব তাড়াতাড়ি পশ্চিমবঙ্গে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনিও এখানে আসতে পারেন। তাঁর অভিযোগ, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেই তাকে জীবিত থাকতে দেবো না। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
সুকান্ত দাবি করেন, “আমরা একজন অপরাধীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি, কিন্তু তাকেও পুলিশ অ্যারেস্ট দেখাচ্ছে না।” তিনি প্রশ্ন তোলেন এই বাচকা থানায় এত মামলা কিভাবে হতে পারে? যদি এত মামলা হয় তাহলে সেই থানা এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কি অবস্থায় রয়েছে? তাহলে এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর ব্যবস্থা করতে হবে।