জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ এবং রাজৌরি জেলার সীমানায় সেনার ট্রাকে বৃহস্পতিবারের জঙ্গি হামলার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও এক জওয়ানের মৃত্যু হল। এই নিয়ে ওই নাশকতায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল পাঁচে। বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌনে ৪টে নাগাদ রাজৌরির ডেরা কি গলি অঞ্চল দিয়ে যাওয়ার সময়ে ৪৮ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের একটি জিপ এবং ট্রাকের উপরে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। সেনা সূত্রের খবর, স্বয়ংক্রিয় রাইফেল এবং গ্রেনেড লঞ্চার ব্যবহার করে জঙ্গিরা।
এই হামলার দায় নিয়েছে লস্কর ই তইবার শাখা সংগঠন দ্য পিপলস অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট (পিএএফএফ)। বুধবার গভীর রাত থেকে ডেরা কি গলি-তে অভিযানে নামে সেনা। সেই অভিযানে অংশ নিতেই যাচ্ছিলেন রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ানেরা। সুরনকোট থানার অধীন বাফলিয়াজ় থেকে রাজৌরির দিকে যাচ্ছিল সেনার গাড়ি দু’টি। বাফলিয়াজ় এবং ডেরা কি গলির মাঝের পাহাড়ঘেরা অঞ্চলে গভীর অরণ্য রয়েছে। তারই সুযোগ নিয়েছে জঙ্গিরা। টোপা পীর অঞ্চলের কাছে একটি সঙ্কীর্ণ পাহাড়ি বাঁকের মুখে সেনার জিপ এবং ট্রাকের উপরে হামলা চালানো হয়। বাঁকের মুখে গাড়ির গতি কমতেই ধেয়ে আগে গুলি এবং গ্রেনেডের ঝাঁক।
জঙ্গি হামলার পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুঞ্চের এসএসপি বিনয় শর্মা-সহ জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আধিকারিক এবং সেনা আধিকারিকেরা। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, রাস্তায় পড়ে রক্ত। সেনা জওয়ানদের ভাঙা হেলমেট দেখা গিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে সেনার গাড়ির কাচও। ঘটনাস্থলেই তিন জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন চার জন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে আরও এক জনের মৃত্যু হয়। সূত্রের খবর, শুক্রবার ভোরে আর এক জন আহত জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে।
২০১১ সালে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল, পুঞ্চ এবং রাজৌরি জঙ্গিমুক্ত। কিন্তু ২০১৯ সালের পরে এই দুই জেলায় ফের জঙ্গি তৎপরতা বেড়েছে। পাক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি এই দুই জেলায় হামলা চালাতে মরিয়া। গত এক মাসে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ২৭ জন জঙ্গি নিহত হয়েছেন বাহিনীর সক্রিয়তায়। তবে এর পাশাপাশি, জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন সেনা এবং আধাসেনা। সেনা সূত্রে খবর, ওই দুই জেলায় অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন জঙ্গি সক্রিয় রয়েছে।