দেশে ঢুকল বর্ষা। রবিবার ভারতীয় মৌসম ভবন (আইএমডি) জানিয়েছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগর এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছেছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু, যার প্রভাবে দেশে হয় বর্ষা। ক্রমে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে চলেছে মৌসুমি বায়ু। ভারত কৃষিনির্ভর দেশ। সে কারণেই বর্ষার উপরেও অনেকটাই নির্ভরশীল দেশ এবং দেশের অর্থনীতি। সময়ে বর্ষা আসার কারণে খুশি কৃষক থেকে সরকার, সকলেই।
উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্য ভারতে দহনজ্বালা। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গিয়েছে। রাজধানী দিল্লিতে প্রবল গরম। এপ্রিলেই তাপপ্রবাহ চলেছে পূর্ব এবং দক্ষিণ ভারতে। এর মধ্যেই সুখবর। মৌসম ভবন রবিবার জানিয়েছে, বর্ষা ঢুকেছে দেশে। তবে মূল ভূখণ্ডে এখনও নয়। মলদ্বীপ এবং কমোরিনেও ঠিক সময়েই ঢুকছে বর্ষা। গত বছরও ১৯ মে মৌসম ভবন লক্ষ করেছিল যে, দক্ষিণ আন্দামান সাগরে পৌঁছেছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। কী দেখে মৌসম ভবন বুঝতে পারে যে, বর্ষা ঢুকছে বা সময়ের আগে আসছে? তাদের তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিমা বায়ুর শক্তি বায়ুমণ্ডলের নীচু স্তরে প্রায় ২০ নট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪.৫ কিলোমিটার উচ্চতায় উঠে যায় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। মেঘলা হয় আকাশ। দীর্ঘ তরঙ্গ বিশিষ্ট বিকিরণ (ওএলআর) কমে যায়।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের বিস্তৃত এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়াও বর্ষার সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে। মলদ্বীপ, কমোরিনের কিছু অংশ, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর, দক্ষিণ আন্দামান সাগর, নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কিছু অংশেও প্রবেশ করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। ২২ মে পর্যন্ত আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মৌসম ভবন হলুদ সতর্কতা জারি করেছে। তাদের পূর্বাভাস, ৩১ মে কেরলে প্রবেশ করতে চলেছে বর্ষা। নির্ধারিত সময়ের এক দিন আগেই সেখানে পৌঁছতে পারে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। গত ১৫০ বছরে কেরলে বর্ষার প্রবেশের সময়ের হেরফের হয়েছে বার বার। ১৯১৮ সালে ১১ মে সেখানে প্রবেশ করেছিল বর্ষা। গত দেড়শো বছরে সবচেয়ে আগে। ১৯৭২ সালে কেরলে বর্ষা প্রবেশ করেছিল ১৮ জুন। গত দেড়শো বছরে সবচেয়ে দেরিতে। গত বছর ৮ জুন কেরলে বর্ষা প্রবেশ করেছিল। সেই তুলনায় এ বার আগেই প্রবেশ করছে বর্ষা। ২০২২ সালে ২৯ মে প্রবেশ করেছিল বর্ষা। সব ঠিকঠাক চললে জুনের প্রথম সপ্তাহ শেষে বা দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে বঙ্গে প্রবেশ করতে পারে বর্ষা।
সরকারি হিসাবে, দেশে সাধারণত জুন মাসে প্রবেশ করে বর্ষা। ফিরে যায় সেপ্টেম্বরে। এপ্রিলেই মৌসম ভবন জানিয়েছিল, এ বছর দেশে স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হবে। উত্তর-পশ্চিম, উত্তর-পূর্ব এবং পূর্বের কিছু অংশ ছাড়া সারা দেশে ভাল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।