হাতে মাত্র মাসখানেক সময়। তার মধ্যেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে খুঁজে নিতে হবে জয় শাহের উত্তরসূরি। কিন্তু নতুন সচিব কে হবেন, তা নিয়ে বিসিসিআই-এর মধ্যে তেমন তাপ-উত্তাপ নেই। এর একটি কারণ, যিনিই নতুন সচিব হোন, তিনি ক্ষমতায় থাকবেন মাত্র ন’মাস।
গত ১ ডিসেম্বর বিসিসিআই সচিব পদে ইস্তফা দিয়েছেন জয়। তাঁর পরিবর্তে কে বোর্ড সচিবের দায়িত্ব সামলাবেন, তা এখনও জানা যায়নি। বিসিসিআই সূত্রে খবর, পরবর্তী সচিব হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন দু’জন ক্রিকেট কর্তা। গুজরাত ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সচিব অনিল পটেল এবং অসমের ক্রিকেট কর্তা দেবজিৎ সাইকিয়া। দেবজিৎ এখন বিসিসিআইয়ের যুগ্ম সচিব পদে রয়েছেন। তিনি দৌড়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে রয়েছেন।
বিসিসিআইয়ের এক কর্তা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন, এখনও পর্যন্ত বোর্ডের অন্দরে নতুন সচিব নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। জানুয়ারির মাঝামাঝি যিনিই সচিবের দায়িত্বে আসবেন, তিনি ন’মাসের বেশি দায়িত্বে থাকবেন না। কারণ বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে। তার পর আবার নির্বাচন হবে। সম্ভবত এ কারণে কেউ তেমন আগ্রহী হচ্ছেন না। তবে ন’মাসের জন্য যিনি সচিব হবেন, তাঁর পুনর্নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ থাকবে।
বিসিসিআইয়ের সংবিধান অনুযায়ী, কোনও পদাধিকারী ইস্তফা দিলে তার ৪৫ দিনের মধ্যে পরিবর্ত পদাধিকারীকে নির্বাচিত করতে হয়। নির্বাচন করতে হয় বিশেষ সাধারণ সভা ডেকে। বিসিসিআইয়ের সংবিধানে আরও বলা রয়েছে, বিশেষ সাধারণ সভার অন্তত চার সপ্তাহ আগে নিয়োগ করতে হবে ইলেক্টোরাল অফিসার। জয় গত ৩০ নভেম্বর ইস্তফা দিয়েছেন। সেই হিসাবে আগামী ১৪ জানুয়ারির মধ্যে দায়িত্ব নিতে হবে নতুন সচিবকে (ডিসেম্বর মাস ৩১ দিন ধরে)। অর্থাৎ, নতুন সচিব নির্বাচনের জন্য বিসিসিআইয়ের হাতে দেড় মাসেরও কম সময় রয়েছে। আগামী ১০-১১ দিনের মধ্যে নিয়োগ করতে হবে ইলেক্টোরাল অফিসারকেও।
বোর্ডের একটি অংশ মনে করছে, এত দিনে সচিব নির্বাচনের কাজ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। কারণ, ২০২২ সালে বোর্ডের যে নতুন সংবিধান তৈরি হয়েছে, তাতে সচিবকেই প্রায় যাবতীয় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। অথচ সেই সচিব পদে কে আসবেন, সেটা এখনও কিছুই ঠিক হয়নি। অন্য কোনও পদ খালি হলে এই গড়িমসি তবু মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু যেখানে সচিব পদের প্রশ্ন, সেখানে এই বিলম্ব অনেক বোর্ডকর্তাই মানতে পারছেন না।
বিসিসিআইয়ের অধিকাংশ কর্তাই এখন রয়েছেন দুবাইয়ে। বুধবার বোর্ড কর্তাদের জন্য দুবাইয়ে একটি নৈশভোজের আয়োজন করেছেন জয়। কিন্তু জানা গেল, সেখানেও পরবর্তী বোর্ড সচিব সংক্রান্ত আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, বুধবারের নৈশভোজ নেহাতই সৌজন্যের। আইসিসির শীর্ষ পদের দায়িত্ব নেওয়ার পর সদ্যপ্রাক্তন সহকর্মীদের এই ভোজ দিয়েছেন জয়।
জয় গত ১ ডিসেম্বর ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) চেয়ারম্যানের কার্যভার গ্রহণ করেছেন। বিসিসিআই থেকে তিনি ইস্তফা দেওয়ায় আরও একটি জায়গা খালি হয়েছে। জয়ই এত দিন ছিলেন আইসিসি-র বোর্ডে ভারতের প্রতিনিধি। তাই আইসিসিতে কে পরবর্তী প্রতিনিধি হবেন, তা-ও ঠিক করতে হবে বিসিসিআইকে। এই পদও গুরুত্বপূর্ণ।