বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পঞ্চম শ্রেণির স্কুল ছাত্রের প্রাণ যাওয়া নিয়ে রহস্য বালুরঘাটে, সিঁদ কেটে দোকানে চুরি করতে গিয়েই দুর্ঘটনা, দাবি মুদি ব্যবসায়ীর

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজনা বালুরঘাটে। সোমবার সকালে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট থানার বোয়ালদাঁড় গ্রাম পঞ্চায়েতের খাসপুর এলাকায়।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই স্কুল ছাত্রের নাম প্রীতম প্রামানিক। বাড়ি বোয়ালদাঁড়ের দুর্লভপুর এলাকায়। এদিন সকালে ছোট্ট প্রীতম ছাগলের খাবারের জন্য কিছু ডালাপালা সংগ্রহ করবার নাম করেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও সে বাড়ি না ফেরায় চিন্তিত হয়ে পড়ে পরিবারের লোকেরা। এরপর কিছুক্ষণ পরেই খাসপুর বাজার এলাকা থেকে ছোট্ট প্রীতমের মৃতদেহ উদ্ধারের খবর ছুটে আসতেই আঁতকে ওঠে পরিবারের লোকেরা। যাকে ঘিরে তুমুল চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়। তড়িঘড়ি ওই স্কুল পড়ুয়াকে উদ্ধার করে খাসপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হলেও শেষরক্ষা হয়নি। এরপরেই মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

যদিও এই ঘটনার পরেই মৃতের পরিবারের লোকেদের তরফে ওই স্কুল ছাত্রকে পরিকল্পিত ভাবে খুনের অভিযোগ তুলেছেন। তাদের অভিযোগ, খাসপুর এলাকার বাসিন্দা পেশায় মুদি ব্যবসায়ী দিবাকর দাস তার দোকানের চারপাশে প্রতিদিন রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ করে রাখতেন। টিনের তৈরি যে দোকানে হাত দিতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে শিশুটির। যা নিয়েই অভিযুক্ত ওই দোকান মালিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি করেছেন মৃত ছাত্রের পরিবারের লোকেরা। যদিও সেই যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে পালটা দোকান মালিকের দাবি, চুরির উদ্দেশ্য নিয়েই দোকানে ঢুকেছিল শিশুটি। রীতিমতো সিঁদ কেটে দোকানে অর্ধেক ঢুকতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে। যা শট সার্কিটের কারণেই হয়ে থাকতে পারে বলে তার অনুমান।

মৃত প্রীতম প্রামানিকের কাকা নারায়ণ প্রামানিক জানিয়েছেন, বাচ্চাটা কি করে দোকানের কাছে গেল তা তারা জানেন না। পাশেই একটি বটগাছ আছে সেই বট গাছের পাতা ভাঙ্গতে গিয়েই সম্ভবত পড়ে গিয়েছিল টিনের উপর, আর সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে। দোকানের চারপাশে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকবার কারণেই এই মর্মান্তিক পরিণতি।

মৃত শিশুর বাবা প্রদীপ প্রামাণিক বলেন, ছাগলের খাবার আনতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে তার ছেলের। চুরির অভিযোগ মিথ্যে। দোকানের চারপাশ বিদ্যুৎ সংযোগ করে রাখবার কারণেই তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনা নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন তারা।

দোকান মালিক দিবাকর দাস অবশ্য বিদ্যুৎ সংযোগের কথা অস্বীকার করছেন। তিনি বলেছেন, জেনে বুঝে তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ করেননি। বর্ষার দিন, কোনো কারণ বশত শট সার্কিট হয়ে গিয়েছিল। যা থেকেই এই দুর্ঘটনা। তবে দোকানের ভেতরে যে অবস্থায় শিশুটিকে পাওয়া গেছে তাতে স্পষ্ট যে চুরি করার জন্যই শিশুটি দোকানে ঢুকেছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.