গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় তিন জন ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ় করেছিল কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি ওই তিন দিন ইঞ্জিনিয়ার শোকজ়ের জবাব দিয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রে খবর। কিন্তু সেই জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকেরা। শোকজ় করার সময় ওই ইঞ্জিনিয়ারদের থেকে বেআইনি নির্মাণ থেকে শুরু করে বহুতল ভেঙে পড়ার কারণ ছাড়াও তাঁদের দায়িত্ব প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, তাঁরা যে জবাব দিয়েছেন, তাতে সেই সব কিছুর বিস্তারিত উল্লেখ নেই। তাই তাঁদের শোকজ়ের উত্তর সন্তুষ্ট করতে পারেনি বিল্ডিং বিভাগের শীর্ষ পুর আধিকারিকদের। শোকজ় করার পাশাপাশি তাঁদের কলকাতা পুরসভার অন্য বিভাগে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ওই ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে কোনও রকম শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেনি কলকাতা পুরসভা। তবে শোকজ়ের জবাব ঠিক ভাবে না দেওয়ায় নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে পুরসভার অন্দরেই।
তাই মনে করা হচ্ছে, শোকজ়ের উত্তরে অসন্তুষ্ট কলকাতা পুরসভা ওই ইঞ্জিনিয়ারদের বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সামনে হাজিরার নির্দেশ দিতে পারে। এই ঘটনায় পুর প্রশাসন সূত্রে খবর, এক জন এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং এক জন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ় করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। গত সোমবার কলকাতা পুরসভায় বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তার পরেই ওই ইঞ্জিনিয়ারদের শোকজ় করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। পাশাপাশি গত বুধবার এই ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত শুরু করে পুরসভা। আপাতত ঘটনার গতিপ্রকৃতি যে দিকে এগিয়েছে, তাতে ওই ইঞ্জিনিয়ারদের বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সামনে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ জারি হতে পারে যে কোনও সময়ে।
গার্ডেনরিচের ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে কলকাতা পুরসভা। যেনতেনপ্রকারেণ এই অস্বস্তি কাটাতে শনিবার একটি তদন্ত কমিটির ঘোষণা করেছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ। সাত সদস্যের এই তদন্ত কমিটির মাথায় রয়েছেন কলকাতা পুরসভায় যুগ্ম কমিশনার জ্যোতির্ময় তাঁতি। তিনিই এই কমিটির চেয়ারম্যান। এ ছাড়া কমিটিতে আছেন পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের প্রতিনিধি, জঞ্জাল সাফাই এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আধিকারিকেরা। পাশাপাশিই কলকাতা পুলিশ, বিএলআরও এবং পুরসভার ‘ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্রফেশনাল’ মুগ্ধা চক্রবর্তীকে রাখা হয়েছে কমিটিতে। সাত সদস্যের সেই কমিটিকে খুঁজে বার করতে হবে আটটি প্রশ্নের জবাব। সেই জবাবের ভিত্তিতে সাত দিনের মধ্যে পুরসভাকে রিপোর্ট দেবেন তাঁরা।