মৃত্যুর পরের দিন সকালে ‘ইঁদুরে খুবলে নিল চোখ’! পটনার হাসপাতালে বিক্ষোভ পরিজনদের, শুরু তদন্ত

শুক্রবার রাতে মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে সেই মৃতদেহ দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রোগীর পরিজনেরা। মৃত্যু নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। রোগীর মৃত্যুর পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নিয়ে অসন্তুষ্ট তাঁরা। অভিযোগ, মৃতদেহে একটি চোখ নেই, যা আগের দিন রাতেও ছিল। মৃত্যুর পর এক দিনের মধ্যে চোখ কী ভাবে উধাও হয়ে গেল? প্রশ্ন তুলে শনিবার দিনভর হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান রোগীর পরিজনেরা। চিকিৎসক এবং হাসপাতালের কর্মচারীদের দাবি, মৃতদেহ থেকে একটি চোখ খুবলে নিয়েছে ইঁদুর!

ঘটনাটি বিহারের পটনার নালন্দা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম ফান্টুস। তিনি গত ১৪ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর শরীরে গুলির ক্ষত ছিল। আত্মীয়েরা জানিয়েছিলেন, অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়েছে ওই যুবককে লক্ষ্য করে। এর পর ১৫ তারিখ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয় ওই যুবকের। তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেখানেই শুক্রবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, রাতে মৃত্যু হলেও দেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো যায়নি। সকাল পর্যন্ত আইসিইউ শয্যাতেই দেহ রাখা ছিল। শনিবার সকালে যুবকের পরিজনেরা দেহ নিতে এলে দেখা যায়, তাঁর বাঁ চোখ নেই। রক্তাক্ত অবস্থায় রয়েছে অক্ষিকোটর। চোখ কোথায় গেল, তা নিয়ে হাসপাতালে বিক্ষোভ শুরু করেন পরিজনেরা। তাঁদের প্রশ্নের জবাবে হাসপাতালের কর্মচারীরা জানান, তাঁর একটি চোখ খুবলে নিয়েছে ইঁদুর।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই তত্ত্ব মানতে নারাজ অনেকে। তাঁদের দাবি, মৃত্যুর পর রোগীর চোখ কেটে বার করে নেওয়া হয়েছে। এক আত্মীয় দাবি করেছেন, ওই রোগীর শয্যার পাশেই তিনি অস্ত্রোপচারের ব্লেড পড়ে থাকতে দেখেছেন। নালন্দা হাসপাতালের সুপার বিনোদ কুমার জানিয়েছেন, এই ঘটনার তদন্তের জন্য চার সদস্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দোষীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘হয় কেউ ওই রোগীর চোখ কেউ কেটে বার করে নিয়েছে, অথবা ইঁদুর চোখ খুবলে নিয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই এটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি। তদন্তের পর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

পুলিশও এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মৃতের পরিবারের তরফে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.