কালো টাকা সাদা করায় মুখ্য ভূমিকা, গরুপাচারকাণ্ডে ইডির চার্জশিটে নয়া নাম মনোজ!

ইডি দেওয়া চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসাবে নতুন নাম মনোজ মেহনত। চার্জশিটে অভিযুক্তের তালিকায় ২৩ নম্বরে নাম রয়েছে তার। কিন্তু কে এই এস মনোজ মেহনত? তিনি অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারির আত্মীয়। তিনি নিজেও একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। মনীশ কোঠারির সংস্থায় কাজ করতেন। অনুব্রতর কালো টাকা সাদা করার জন্য মুখ্য ভূমিকা ছিল মনোজ মেহনতের। চার্জশিটে দাবি ইডির। 

হাওড়ার রাউন্ড ট্যাংক রোডে শান্তিকুঞ্জ অ্যাপার্টমেন্টে। সেই অ্যাপার্টমেন্টেরই ব্লক সি-তে ফ্ল্যাট মনোজ মেহনতের। যদিও এদিন ফ্ল্যাটে ছিলেন না মনোজ মেহনত। দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পর তাঁর স্ত্রী সুমন মেহনত বেরিয়ে আসেন। স্বামী মনোজ মেহনত কোথায় জানতে চাইলে, তিনি জানান মনোজ মেহনত বাইরে আছেন। আরও বলেন মণীশ কোঠারির সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক। তাদের আত্মীয় হয়। যে কারনে মনোজের নাম জড়ানো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত ইডির চার্জশিটে মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিপুল পরিমাণ টাকাকে আড়ালে রাখার জন্য অনুব্রতর ছিল অনের বেনামী ঢাল। তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর থেকে একাধিক তৃণমূল কর্মীর নামে-বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা সরিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। ইডির চার্জশিটে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। চার্জশিটে ইডির দাবি, বাড়ির কাজের লোক বিদ্যুৎবরণ গায়েন ও কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে প্রচুর বেনামে সম্পত্তি কেনা হয়। তারপর বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা সরানো হয়। 

এছাড়াও তৃণমূল কাউন্সিলর ওমর শেখ, দলীয় কর্মী অর্ক দত্ত, তাপস মণ্ডল ও শ্যামাপদ কর্মকার এবং সবজি ব্যবসায়ী বিজয় রজক- এদের প্রত্যেকের নামে অনুব্রতর কথায় সায়গাল হোসেন বেনামে অ্যাকাউন্ট খোলে। সেখান বিপুল অর্থের টাকা নগদে জমা করা হত। পরে তা অনুব্রত এবং তাঁর পরিবার সদস্য ও সায়গেল হোসেনরা ব্যবহার করত। ইডির দাবি এমনই। কারণ প্রত্যেকেই ইডির কাছে বয়ানে দাবি করে যে, অনুব্রতর কথা মতো সায়গেল হোসেন তাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট খুললেও, সেই অ্যাকাউন্টের পাশবুক থেকে চেকবুক সবই থাকত অনুব্রতর কাছে। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা থেকে শুরু করে ট্রান্সফার, সবই করতেন অনুব্রত মণ্ডল। লেনদেন সম্পর্কে তাঁরা কিছু-ই জানেন না। 

পাশাপাশি ইডির চার্জশিটে আরও দাবি করা হয়েছে যে, গরু পাচারের দুই চক্রী আবদুল লতিফ ও এনামুল হক সায়গেল হোসেনের দুটি নম্বরে ফোন করে অনুব্রতর সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। কোন দুটি নম্বর? ইডি চার্জশিটে সেই দুটি নম্বরের উল্লেখ করেছে। এনামুল হক ও আবদুল লতিফের সঙ্গে যোগাযোগের সায়গল হোসেনের দুটি নম্বরের ২০১৭ সাল থেকে কল ডিটেলস রেকর্ডও চার্জশিটে তুলে ধরেছে ইডি। গরু পাচারের সেফ প্যাসেজ করে দিতেই সায়গল হোসেনের ফোন থেকে অনুব্রতর সঙ্গে লতিফ ও এনামুলের নিয়মিত কথা চলত। ইডির দাবি তেমনই। পাশাপাশি, ইডির চার্জশিটে আরও দাবি করা হয়েছে যে, সায়গাল হোসেন তার বয়ানে স্বীকার করেছে যে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাকে ফোন করত আবদুল লতিফ ও এনামুল হক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.