নিম্নচাপের প্রভাবে সোমবার থেকে আবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় দফায় দফায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর বিশেষ বুলেটিন প্রকাশ করে জানিয়েছে, রাজ্য থেকে সরে গিয়েছে নিম্নচাপ। শক্তিক্ষয় করে তা নিম্নচাপ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। বুধবার থেকে তার প্রভাব কমবে রাজ্যে। আর তার জেরেই দক্ষিণে কমতে পারে বৃষ্টির পরিমাণ। তবে বৃষ্টি থামছে না। উত্তরেও চলবে ঝড়বৃষ্টি। কোনও কোনও জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসও রয়েছে।
হাওয়া অফিসের বিশেষ বুলেটিন বলছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর যে নিম্নচাপ ছিল, তা শক্তি হারিয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ তা নিম্নচাপ অঞ্চল হিসেবে উত্তর ঝাড়খণ্ড এবং সংলগ্ন দক্ষিণ বিহারের উপরে অবস্থান করছিল। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ওই নিম্নচাপ অঞ্চল ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের উপর দিয়ে পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের উপর অবস্থান করবে।
বুধবার এই নিম্নচাপের প্রভাব কমবে দক্ষিণবঙ্গে। নিম্নচাপ ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে যেতেই বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। তবে বৃষ্টি থামবে না। বুধবার বৃষ্টির জন্য উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। বাকি জেলায় ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও সতর্কতা জারি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আগামী সোমবার পর্যন্ত দক্ষিণের সব জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তবে কোথাও সতর্কতা জারি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বুধবারের পর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করবে বলে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি ক্রমশ বাড়বে।
বুধবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি উত্তরবঙ্গের সব জেলায় চলবে। ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুরে। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার উত্তরে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বাড়বে। শনিবার থেকে উত্তরের কয়েক জেলায় আবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। জারি করা হয়েছে সতর্কতাও। আগামী শনিবার থেকে সোমবার দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি— এই পাঁচ জেলার বেশির ভাগ জায়গাতেই ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলতি বর্ষার মরসুমে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি এবং দক্ষিণবঙ্গে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে স্বাভাবিকের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। উত্তরবঙ্গে স্বাভাবিকের তুলনায় ৪০ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।