দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভারতের জার্সিতে খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই রান পেলেন রিঙ্কু সিংহ। পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন, উইকেটে গতি থাকুক বা না থাকুক, তাঁর ব্যাটে রান আসতেই থাকবে।
পোর্ট এলিজাবেথে দ্বিতীয় ম্যাচ শুরুর আগে সম্প্রচারকারী চ্যানেলে রিঙ্কু বলেন, ‘‘এখানকার উইকেটে বাউন্স আছে। কিন্তু সেটা আমার পছন্দের। উইকেটে বাউন্স থাকলে আমার ভালই লাগে।’’ ব্যাট করতে নেমে রিঙ্কু বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাউন্স সত্যিই কোনও সমস্যা করে না তাঁর সামনে। উইকেটে গতি থাকলেও রিঙ্কুর শট খেলতে কোনও সমস্যা হয় না। এ দিন ৩০ বলে অর্ধশত রান পূর্ণ করেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের এই ব্যাটসম্যান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটাই প্রথম অর্ধশত রান রিঙ্কুর।
শুধু বাউন্সই নয়, রিঙ্কু এও বলেছেন, পিচে গতি থাকলেও তাঁর কোনও সমস্যা হয় না। মঙ্গলবার ব্যাট করতে নামার আগে রিঙ্কু বলছিলেন, ‘‘পিচে গতি থাকাটা আমি পছন্দ করি। তা হলে আমি সেই গতিটা কাজে লাগিয়ে শট খেলতে পারব। যদি সেটা করতে পারি, তা হলে রান উঠবে।’’ শুধু মুখে বলাই নয়, কাজেও সেটা এ দিন করে দেখালেন রিঙ্কু। এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের মারা একটা ছয় এ দিন মিডিয়া বক্সের কাঁচ ভেঙে দেয়। যে ছবি আবার ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে।
জীবনের প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকা সফর উপভোগ করছেন রিঙ্কু। সফরের মধ্যেই কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে একটি নাচের ভিডিয়ো দিয়েছেন তিনি, যা তুলে ধরেছে কেকেআর। সেখানে দেখা গিয়েছে, ‘অ্যানিম্যাল’ সিনেমার কটি গানের তালে কোমর দোলাচ্ছেন এই ব্যাটসম্যান। সেই ভিডিয়োর নীচে কেকেআর লিখেছে, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের নায়ক হাজির হয়েছে নতুন অবতারে।’’
রিঙ্কুর প্রশংসা শোনা গিয়েছে সুনীল গাওস্কর, ডেল স্টেনের মতো কিংবদন্তিদের মুখে। গাওস্কর বলছিলেন, ‘‘রিঙ্কুর এই উত্থান বুঝিয়ে দিচ্ছে, খুব কঠিন পরিস্থিতি থেকে উঠে এসেও ক্রিকেটে সাফল্য লাভ করা যায়।’’ স্টেনও মুগ্ধ রিঙ্কুর ব্যাটিংয়ে। স্টেনের মন্তব্য, ‘‘রিঙ্কুকে দেখে মনে হয়, কখনও যেন চাপেই পড়ে না।’’ ভারতের আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার সঞ্জয় মঞ্জরেকর সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘কী দুরন্ত একটা ইনিংস খেলে গেল রিঙ্কু। অন্ধের মতো ব্যাট চালানো নয়। অঙ্ক কষে শট খেলা। ছয়ের চেয়ে চার বেশি মেরেছে। এই রকম ব্যাটিং করা মানে ধারাবাহিকতাটা বজায় রাখা। যারা শুধু ছয় মারতে চায়, তাদের থেকে রিঙ্কুর ধারাবাহিকতা তাই বেশি হবে।’’ এ দিন ৩৯ বলে ৬৮ রান করে যান রিঙ্কু। মারেন ন’টি চার, দু’টি ছয়। এর আগে জাক কালিসও ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন রিঙ্কুর। ঠান্ডা মাথায় বোলারদের প্রহার করার মানসিকতা অবাক করেছে তাঁকে।
শুরুটা ভাল হলেও শেষটা মনের মতো হল না ভারতের। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব তো জানিয়েই দিলেন, প্রথম পাঁচ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার বিধ্বংসী ব্যাটিং হারিয়ে দিয়েছে তাঁদের। সূর্যকুমারের কথায়, ‘‘রানটা খারাপ হয়নি। কিন্তু এই পরিবেশকে কাজে লাগিয়েছে বিপক্ষ। প্রথম পাঁচ ওভারেই ওরা আমাদের হাত থেকে ম্যাচ কেড়ে নেয়।’’