মন্দারমণির ‘অবৈধ’ হোটেল বা লজ কোনওটাই আপাতত ভাঙা যাবে না। শুক্রবার এমন নির্দেশই দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। গত ১১ নভেম্বর মন্দারমণির ‘অবৈধ’ হোটেল-লজগুলি ভেঙে ফেলার যে নির্দেশ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন, তাতেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। বিচারপতির নির্দেশ আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই স্থগিতাদেশ থাকবে। ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এই বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককে রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে। ১০ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
গত ১১ নভেম্বর সিআরজ়েড (কোস্টাল রেগুলেটেড জ়োন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি)-এর জেলা কমিটির তরফে মন্দারমণি এবং সংলগ্ন আরও চারটি মৌজায় ১৪৪টি হোটেল, লজ, রিসর্ট এবং হোম স্টে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০ নভেম্বরে মধ্যে ওই সব বেআইনি নির্মাণ ভেঙে জায়গা পরিষ্কার করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০২২ সালে এই বেআইনি হোটেলগুলি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। কারণ, হোটেলগুলি উপকূল বিধি না-মেনেই গড়ে উঠেছিল। এর মধ্যে শুধু দাদনপাত্রবাড়েই রয়েছে ৫০টি হোটেল, সংলগ্ন সোনামুইয়ে ৩৬টি, সিলামপুরে ২৭টি, মন্দারমণিতে ৩০টি হোটেল এবং দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর মৌজায় একটি লজ রয়েছে। এ সবই ভাঙা পড়ার কথা।
জাতীয় পরিবেশ আদালতের সেই নির্দেশ মেনেই গত ১১ নভেম্বর হোটেলগুলি ভাঙার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় মন্দারমণি হোটেল অ্যাসোসিয়েশন। মামলাকারীদের হয়ে সওয়াল করেছেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মামলাতেই বিচারপতি সিংহ জানিয়েছেন, আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মন্দারমণির হোটেলগুলি ভাঙা যাবে না। তার আগে জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ‘অবৈধ’ হোটেল ভাঙার বিষয়টি নিয়ে আগেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। মন্দারমণি এবং সংলগ্ন এলাকার সৈকতে যে হোটেলগুলি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন, তা কার্যত নবান্নকে অন্ধকারে রেখেই করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, কোনও রকম বুলডোজ়ার চলবে না বাংলায়। এ বার কলকাতা হাই কোর্ট ‘অবৈধ’ হোটেল ভাঙায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল।