ভোট আবহে (West Bengal Assembly Election 2021) আবারও বিজেপি কর্মীর (Bengal BJP) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। এবার ঘটনাস্থল উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) ডালখোলা করণদিঘি। গলায় জামার ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে দেহ, মাথার পিছনে একাধিক আঘাতের চিহ্ন, শরীরে কাটা দাগ। বিজেপি কর্মীর রহস্যমৃত্যুতে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। মৃতের নাম সত্যজিৎ সিংহ (২২)।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সত্যজিতের বাড়ি করণদিঘির বাজারগাঁও ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেগুয়া গ্রামে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, রবিবার বিকালেও ফোনে সত্যজিতের সঙ্গে কথা হয় তাঁদের। বিকালের পর থেকে সত্যজিতের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁরা। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বিকালেই দোকান থেকে তাঁঁকে কেউ ডেকে নিয়ে যায়। তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি সত্যজিতের।
সোমবার সকালে বাড়ির অদূরে বাঁশঝাড় থেকে সত্যজিতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। খুনের অভিযোগ তুলেছে পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, সত্যজিতকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোট আবহে এই ঘটনায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ভোটের আবহেই এই নিয়ে চার বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল।
২৪ মার্চ, ২০২১
মার্চ মাসের ২৪ তারিখ দিনহাটার ডাকবাংলো পাড়ার পশু হাসপাতালের বারান্দা থেকে অমিত সরকার নামে এক বিজেপি নেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। অমিত দিনহাটায় বিজেপির শহর মণ্ডল সভাপতি ছিলেন। ঘটনাকে ঘিরে তপ্ত হয়ে ওঠে দিনহাটা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। ভাঙচুর করা হয় তৃণমূলের কার্যালয়ও। পরিস্থিতি বাগে আনতে রীতিমতো হিমশিম খায় পুলিশ। পরে অবশ্য এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই রিপোর্ট জমা হয়।
২৯ মার্চ, ২০২১
ঠিক সপ্তাহ খানের ব্যবধানেই পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে উদ্ধার হয় বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ। বাগমারি এলাকায় জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয় লালমোহন সোরেন নামে ওই বিজেপি কর্মী ঝুলন্ত দেহ। স্থানীয়দের দাবি জানান, গত কয়েকদিন ধরেই পতাকা ছেঁড়া, দেওয়াল মুছে দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে এলাকা অশান্ত ছিল। প্রতিবাদ করেছিলেন বিজেপি কর্মী লালমোহন সরেন। তার জেরেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন বিজেপি কর্মীরা। এক্ষেত্রে আত্নহত্যার তত্ত্বও খাঁড়া করা হয়। রিপোর্টে সেই বিষয়টিই উল্লেখ করা হয়।
১ এপ্রিল, ২০২১
নন্দীগ্রামে ভোটগ্রহণের আগের দিনই ভেকুটিয়ায় নিজের বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় উদয় দোহে নামে এক বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ। এই ঘটনাতেও তৃণমূলের দিকে আঙুল ওঠে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ভোটের আগের দিনই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বাড়িতে গিয়ে উদয়কে হুমকি দেয়। মানসিক চাপেই উদয় আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করে পরিবার। ঘটনাকে ঘিরে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয় গোটা নন্দীগ্রামে।
এরপর ৫ এপ্রিল। আবারও এক বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনায় চাকুলিয়ার বিজেপি প্রার্থী শচীন প্রসাদ বলেন, “একজন চিকিৎসক হিসাবে আমি বলছি, এটা খুন। আত্মহত্যা হলে মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন থাকত না।”