রাজ্য-রাজভবন দ্বন্দ্বের মধ্যেই ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য মনোনয়ন রাজ্যপালের

একই সঙ্গে ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য ঠিক করে দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। কয়েক দিন আগে এর মধ্যে ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বতী উপাচার্য হিসেবে নিজেই দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। রাজভবন সূত্রের খবর, রবিবার রাতে ওই ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ কল্যাণী বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেলগাছিয়ার পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়েরও অন্তর্বর্তী উপাচার্য মনোনয়ন করেছেন তিনি। নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ীকে নিযুক্ত করেছেন রাজ্যপাল।

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিচালনা নিয়ে ইতিমধ্যেই তীব্র সংঘাতে জড়িয়েছে নবান্ন এবং রাজভবন। শনিবার রাজভবনের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হলেন উপাচার্য। সব কিছু তাঁর নির্দেশে হবে। রেজিস্ট্রার, সহ-উপাচার্য তাঁর নির্দেশ মেনে চলবেন। এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় রবিবার এর ব্যাখ্যাও দেন রাজ্যপাল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা আচার্যের নির্দেশিকা নয়। সংবিধান, ইউজিসি আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতে এটি তৈরি করা হয়েছে।’’ আচার্য-উপাচার্য বিতর্ক নিয়েও এ দিন মুখ খুলে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আচার্য উপাচার্য হিসেবে কাজ করেননি, করবেন না, করতে পারেন না এবং করা উচিত নয়। কিছু ক্ষেত্রে যেখানে পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রির শংসাপত্র পেতে সমস্যায় পড়েছেন, যার ফলে তাঁরা চাকরি পর্যন্ত হারাতে পারেন, আমি বলেছিলাম, শুধুমাত্র সেই সব ক্ষেত্রে, শিক্ষার্থীদের সাহায্যের জন্য আচার্য হস্তক্ষেপ করবেন এবং শংসাপত্রগুলি ছাড়ার ব্যবস্থা করবেন। এর বেশিও না, কমও না।’’

রাজ্য-রাজভবন দ্বন্দ্বের মধ্যেই রাজ্যের নির্দেশে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে ঝাড়গ্রামের সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক এবং ফিনান্স অফিসারকেও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এর পরেই শনিবার রাজভবন থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রাজ্য এই নির্দেশ দিতে পারে না। উচ্চশিক্ষা সচিব এই কাজ করতে পারেন না। রাজ্যপাল এ দিন বলেন, ‘‘ওই নির্দেশিকায় স্পষ্ট করা আছে যে, সরকারের উচিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করা। এই নির্দেশিকা পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যের জারি করা নয়। এটা সংবিধান, ইউজিসি আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতে তৈরি। প্রতিষ্ঠানের স্বায়ত্তশাসন, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন অত্যন্ত পবিত্র বিষয় এবং সকলকেই তার সম্মান করতে হবে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.