করোনা আবহেই এবার মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগরে চলছে পুণ্যস্নান৷ তবে ফি বছরের তুলনায় এবার সাগরমেলার ছবি সম্পূর্ণ ভিন্ন৷ সেখানে পুণ্যার্থীদের ভিড় অনেকটাই কম৷ বরং নিউ নর্ম্যালে জোড় দেওয়া হয়েছে ই-স্নানের উপরেই৷
প্রতি বছর মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগরে তিন ধারণের জায়াগাটুকুও যেন থাকে না৷ পুণ্যলাভের আশায় দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় জমান লক্ষ লক্ষ মানুষ৷ সেই চেনা ছবিতে এবার ভাটার টান৷ বরং ভিড় এড়াতে অনলাইনে গঙ্গাসাগরর মেলা দেখানোর বন্দোবস্ত করেছে রাজ্য সরকার৷ এমনকী অনলাইনে গঙ্গাসাগরের জল অর্ডার দেওয়ার বন্দোবস্তও করা হয়েছে৷ বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে সাগরের পুণ্য জল আর প্রসাদ৷
প্যান্ডেমিক পরিস্থিতির মধ্যে গঙ্গাসাগর স্নান হবে কিনা, তা নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর বুধবার অবশেষে শর্তসাপেক্ষে স্নানের অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট৷ প্যান্ডেমিকের মধ্যে করোনা বিধি মেনেই চলছে গঙ্গাসাগর মেলা৷ পুণ্যার্থীদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে বারবার আর্জি জানানো হয়ছে৷ প্রশাসনের তরফেও প্রতিনিয়ত চলছে স্যানিটাইজেশনের কাজ৷
সাগরপাড়ের নজরদারি চালাতে টহল দিচ্ছে উপকূলরক্ষী ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এছাড়াও গঙ্গাসাগর মেলার প্রবেশ পথগুলিতে মেডিক্যাল সক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ এছাড়াও মেলা চত্বরে করোনা আক্রান্তদের জন্য হাসপাতাল থেকে শুরু করে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার, যাবতীয় বন্দোবস্ত রয়েছে।
পাশাপাশি নিরাপত্তার কড়া বেষ্টনীতে ঘিরে ফেলা হয়েছে মেলা-প্রাঙ্গণ৷ গঙ্গাসাগর মেলার বিভিন্ন প্রান্তে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা, ড্রোনে সাগরমেলা প্রাঙ্গণে নজরদারি চালানো হচ্ছে৷
করোনা আবহে কী ভাবে সরকার মেলার আয়োজন করছে তা জানতে চেয়ে রাজ্য সরকারের হলফনামা চেয়ে পাঠিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ বুধবার শুনানির সময় রাজ্যের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গঙ্গাসাগরে মানুষের ভিড় অনেকটাই কম৷ গতবারের তুলনায় মাত্র দশ শতাংশ মানুষ এসেছে সাগরে৷ এছাড়াও সাগরের জল বহমান হওয়ায় করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটা কম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
সাগর নিয়ে বেশ তৎপর রাজ্য সরকার৷ সুব্রত মুখোপাধ্যায় সহ একাধিক মন্ত্রী পৌঁছে গিয়েছেন সাগরতটে। সাগর সঙ্গমে স্নানের অনুমতি মিললেও সকলেই জোড় দিচ্ছেন ই-স্নানের উপর৷