বিশ্বকাপে জীবনের প্রথম গোল, জিতল দলও, তবু উচ্ছ্বাস নেই সুইস ফুটবলারের, কেন?

ফুটবলারদের স্বপ্ন থাকে বিশ্বকাপের মঞ্চে গোল করার। সেই স্বপ্ন অনেকের পূরণ হয়, অনেকের হয় না। দেশের জার্সি পরে খেলতে নেমে বাড়তি অ্যাড্রিনালিন ঝরে অনেকের। অপেক্ষায় থাকেন গোল করার জন্য। বৃহস্পতিবার সুইৎজ়ারল্যান্ড এবং ক্যামেরুনের ম্যাচে কাঙ্ক্ষিত সেই গোল এল ব্রিল এম্বোলোর পা থেকে। বিশ্বকাপে এটাই তাঁর প্রথম গোল। কিন্তু উৎসব করলেন না তিনি।

২৫ বছরের এম্বোলো বৃহস্পতিবার গোল করে তাঁর দেশ সুইৎজ়ারল্যান্ডকে এগিয়ে দেন। ৪৮ মিনিটের মাথায় শাকিরির পাস থেকে গোল করেন এম্বোলো। কিন্তু বিশ্বকাপে জীবনের প্রথম গোল করে তিনি উৎসবে মাতেননি। দলের বাকি ফুটবলাররা তখন আনন্দে আত্মহারা। দর্শকদের দিকে ছুটে যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু গোলের নায়ক তখন চুপ করে দাঁড়িয়ে। আসলে এম্বোলো গোল করলেন তাঁর জন্মভূমির বিরুদ্ধে। ক্যামেরুনেই জন্ম এম্বোলোর। ১৯৯৭ সালে সে দেশে জন্ম নিলেও এখন সুইৎজ়ারল্যান্ডের বাসিন্দা তিনি।

ছোটবেলায় এম্বোলোর বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। তাঁর যখন ৫ বছর বয়স, সেই সময় এম্বোলোকে নিয়ে ফ্রান্সে চলে যান তাঁর মা। সে দেশে গিয়ে এক সুইসকে বিয়ে করেন তিনি। এর পরেই এম্বোলোকে নিয়ে সুইৎজ়ারল্যান্ডের বাসেলে চলে যান তাঁরা। সেখানেই বড় হয়ে ওঠেন এই স্ট্রাইকার।

২০১৪ সালে সুইৎজ়ারল্যান্ডের নাগরিকত্ব পান এম্বোলো। পরের বছরই সুযোগ পেয়ে যান জাতীয় দলের হয়ে খেলার। দেশের হয়ে গোল করলেও বিশ্বকাপে এটিই প্রথম গোল এম্বোলোর। তাঁর গোলে ম্যাচও জিতল সুইৎজ়ারল্যান্ড। কিন্তু উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন না তিনি। এম্বোলোর এই ঘটনা মনে করিয়ে দিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে। যিনি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে গোল করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতেন না। নিজের প্রিয় ক্লাবের বিরুদ্ধে গোল করেও কখনও আনন্দ করতে দেখা যায়নি তাঁকে। যদিও সেটা ক্লাব আর এখানে লড়াইটা দেশের মধ্যে। বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চেও জন্মভূমির বিরুদ্ধে গোল করে উচ্ছ্বাস না করার দৃষ্টান্ত রাখলেন এম্বোলো।

বৃহস্পতিবার শুরু থেকেই সুইৎজ়ারল্যান্ডকে চাপে রেখেছিল ক্যামেরুন। প্রথমার্ধে সবুজ জার্সিধারীদের চাপ বাড়ছিল। গোলের সামনে বার বার পৌঁছেও যাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু কিছুতেই গোলের মুখ খুলতে পারছিলেন না। সেই কাজটাই করে ফেললেন এম্বোলো। শাকিরির পাস তাঁকে সেই সুযোগ এনে দিল। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে মূল্যবান তিন পয়েন্ট তুলে নিল সুইৎজ়ারল্যান্ড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.