বগটুইকাণ্ডে নিহত হয়েছিলেন মিহিলাল শেখের পরিবারের লোকজন। সেই মিহিলালের পরিবারের সদস্যেরা এ বার পঞ্চায়েত ভোটে লড়তে চান। সোমবার বীরভূমের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে যান মিহিলালের ভাইপো এবং তাঁর স্ত্রী। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এক সময় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত মিহিলালও। তিনি জানান, তাঁর পরিবারের তিন জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। বিজেপির টিকিটে পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তাঁরা।
সোমবার রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক অফিসের সামনে হলুদ পাঞ্জাবী পরিহিত মিহিলালকে দেখা যায় পরিবারের লোকজনের মনোনয়নপত্র মনোযোগ দিয়ে দেখছেন। তাঁর পরিবারের এক মহিলা সদস্য-সহ তিন জন বিজেপির হয়ে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে লড়বেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মিহিলাল বলেন, ‘‘ আমার ভাইপো, ভাইপোর স্ত্রী এবং আরও কয়েক জন মনোনয়ন দিচ্ছে।’’ কেন ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন পরিবারের সদস্যেরা? মিহিলালের কথায়, ‘‘শাসকদলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে ভোটে লড়ছি আমরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দুর্নীতিমুক্ত শাসন চাইছি।’’
গত বছরের ২১ মার্চ তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুনের রাতে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে মৃত্যু হয়েছিল মিহিলালের স্ত্রী, মা, মেয়ে এবং বোনের। পরে মিহিলাল অভিযোগ করেন, রাজ্যের মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই ওই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘যারা আমাদের লোকজনকে পুড়িয়ে মারল, তারা এখন জেলের মধ্যে বিয়ার খাচ্ছে। বাইরে থেকে জেলে খাবার যাচ্ছে। এগুলো আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় করাচ্ছেন। এত দিন মুখ খুলিনি। সব লোককে টানাটানি করব না ভেবেছিলাম। কিন্তু পারলাম না।’’ পরে রামপুরহাটের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি আনারুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও মিহিলাল বা অভিযুক্ত আনারুলকে চেনেন না বলে জানান আশিস।
কয়েক মাস আগে মিহিলাল আবার মুখ খুলেছিলেন। বলেছিলেন, প্রাণসংশয়ে ভূগছেন তিনি। তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও ভাল করার জন্য জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। কিছু দিন আগে বীরভূমের মাড়গ্রামে বোমা ফেটে মারা যান দুই তৃণমূল কর্মী। মিহিলাল আশঙ্কা করেন, তাঁর উপরও হামলা হতে পারে।