রেশন দুর্নীতির তদন্তে সাত সকালেই তাঁর ঊর্ধ্বতন তথা ‘বস’ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে হাজির হয়েছিল ইডি। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে ইডির একটি দল পৌঁছেছিল তাঁর অর্থাৎ জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্তসহায়ক অমিত দে-র বাড়িতেও। কিন্তু তিনি বাড়িতে ছিলেন না। পুজোয় ছুটি কাটাতে সপরিবারে পুরী গিয়েছিলেন অমিত। বাড়ির দরজায় তালা ঝুলছিল। ফলে নাগেরবাজারে অমিতের তিনটি ফ্ল্যাটের কোনওটিতেই ঢুকতে পারেননি কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা। গেটের বাইরে ঠায় পাহারায় ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। অপেক্ষা করছিল ইডিও। অবশেষে সন্ধ্যায় সেই অপেক্ষার অবসান হল। বিমানবন্দর থেকে সপরিবার অমিতকে গাড়িতে চাপিয়ে বাড়ি নিয়ে এল ইডি। খুলল ফ্ল্যাটের দরজা। শুরু হল নতুন তল্লাশি পর্ব।
নাগের বাজারের দু’টি অ্যাপার্টমেন্টে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্ত সহায়কের মোট তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে একটি অ্য়াপার্টমেন্টের নাম ভালবাসা অন্যটির নাম পারুল। দু’টি অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে ৫০০-৬০০ মিটারের দূরত্ব। তবে পারুলের ফ্ল্যাটে এখন আর থাকেন না অমিত। ভালবাসা অ্যাপার্টমেন্টেই দু’টি ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। সেখানেই থাকেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুবনেশ্বর থেকে বিমানে কলকাতায় ফেরেন মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক। সেখান থেকে ইডির গাড়িতেই নাগেরবাজারের ভালবাসা অ্যাপার্টমেন্টে আসেন তিনি।
অমিতের সঙ্গে ছিলেন তাঁর বয়স্ক মা। তাঁর হাঁটাচলার সমস্যা রয়েছে। ছিলেন স্ত্রী এবং এক সন্তান। তাঁরা যখন ফ্ল্যাটে ঢোকেন, তখন ফ্ল্যাটটি ঘিরে রেখেছে কেন্দ্রীয়বাহিনীর জওয়ানরা। বাইরে অপেক্ষা করছিলেন ইডির আধিকারিকেরাও। উপস্থিত সাংবাদিকেরা তাঁদের দেখে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেও কোনও কথা না বলেই ভিতরে ঢুকে যান অমিত এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা।
রেশন দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৭টা থেকে তল্লাশি শুরু হয় রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে। তার পর থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা কেটে গেলেও ইডির ম্যারাথন তল্লাশি থামেনি। উল্টে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের সল্টলেকের দু’টি বাড়ির পাশাপাশি তাঁর বেনিয়াটোলা লেনের পৈতৃক ভিটে, এমনকি, বেলেঘাটায় মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক অমিতের বন্ধুর বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ইডি।