উদ্ধারকাজ যত এগোচ্ছে, কেরলের ওয়েনাড়ে ততই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। স্থানীয় অসমর্থিত সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই সেখানে মৃতের সংখ্যা ২৯০ ছুঁয়েছে। অনেকেরই আশঙ্কা, অচিরেই তা ৩০০ পেরোবে। কেরলের রাজস্বমন্ত্রী কে রাজন ভূমিধসে ১৯০ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিলেন। যদিও উদ্ধারকারীরা সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন বহু নিখোঁজ মানুষের সন্ধান না পাওয়া যাওয়ায় প্রকৃত সংখ্যাটি দ্বিগুণ হতে পারে।
শুক্রবারও ওয়েনাড়ের ভূমিধসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি গ্রাম মুণ্ডাক্কাই, চূড়ামালা এবং আট্টামালা-য় যৌথ তল্লাশি অভিযানে নামবে সেনা, এনডিআরএফ, উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং নৌসেনা। কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে তল্লাশি অভিযান চালাবে যৌথ বাহিনী। প্রতিটি দলে তিন জন স্থানীয় বাসিন্দা এবং বন দফতরের এক জন কর্মীকে রাখা হবে। তা ছাড়াও উদ্ধার অভিযানকে ত্রুটিমুক্ত করতে ড্রোনের মাধ্যমেও হবে নজরদারি।
ধস নামার পরে কাদামাটি এবং জলের স্রোতে ভেসে গিয়েছিল মুণ্ডাক্কাই এবং চূড়ামালার মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী সেতুটি। বৃহস্পতিবার দ্রুততার সঙ্গে সেখানে বেইলি ব্রিজ তৈরি করে ফেলে সেনা। অস্থায়ী সেতু তৈরি হয়ে হয়ে যাওয়ার ফলে উদ্ধারকাজে আরও গতি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শুক্রবার চালিয়ার নদী তীরবর্তী অঞ্চল ধরে তল্লাশি অভিযান চলবে। তবে বৃষ্টি এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে বার বার বিঘ্নিত হচ্ছে উদ্ধারকাজ। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শনিবার অবধি ভারী বৃষ্টি চলবে ওয়েনাড়ে। তার পরেও বেশ কয়েক দিন দুর্যোগ চলতে পারে। সোমবার অবধি বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে কেরলের ত্রিশূর, মলপ্পুরম, কোঝিকোড়, কন্নুর এবং কাসারগড় জেলায়। শুক্রবার এই জেলাগুলিতে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকছে। বেশ কিছু স্কুলকে আশ্রয় শিবির হিসাবে ব্যবহার করছে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবারই দুর্যোগে বিপর্যস্ত ওয়েনাড়ে পৌঁছন সেখানকার প্রাক্তন সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। সঙ্গে ছিলেন বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢ়রাও। তাঁরা মৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। বৃহস্পতিবার রাহুল বলেন, ওয়েনাড়ের পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে তাঁর বাবার মৃত্যুর সময়ের অনুভূতির কথা মনে পড়ে গিয়েছে। শুক্রবার কংগ্রেস নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করবেন দু’জনে এবং উদ্ধারকাজে দলের তরফে কী ভূমিকা পালন করতে হবে, তা জানাবেন। মুণ্ডাক্কাই এবং চূড়ামালায় বন দফতরের অফিসেও যাওয়ার কথা রয়েছে রাহুল-প্রিয়ঙ্কার।