হাসপাতালে এমআরআই করার তারিখ দেওয়া হয়েছে দু’বছর পর! আদালতের দ্বারস্থ হলেন প্রৌঢ়

চিকিৎসকরা হাঁটুর অস্ত্রোপচার করতে বলেছেন। কিন্তু হাসপাতাল এমআরআই করার তারিখ দিয়েছে দু’বছর পর, ২০২৪ সালে! হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আদালতের দ্বারস্থ হলেন দিল্লির সীতারাম বাজারের বাসিন্দা গোলাম মেহবুব।

হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর একটি ট্রাক থেকে মাল নামাতে গিয়ে নীচে পড়ে যান প্রৌঢ় মেহবুব। পড়ে গিয়ে বাম হাঁটুতে ব্যাপক চোট পান তিনি। ঘটনার চার মাস পরেও ব্যাথা না কমায় তিনি লোকনায়ক হাসপাতালের এক জন চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসক জানান, তাঁর হাঁটুর অবস্থা খুবই খারাপ। শীঘ্রই অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। অস্ত্রোপচারের আগে মেহবুবকে হাঁটুর এমআরআই করে আসারও নির্দেশ দেন ওই চিকিৎসক। চিকিৎসকের পরামর্শে নির্দিষ্ট বিভাগে যাওয়ার পর তাঁকে ২০২৪-এর ১৫ জুলাই অর্থাৎ, প্রায় দু’বছর পর এমআরআই করতে আসতে বলা হয়। এমআরআই করাতে দু’বছরের অপেক্ষা! শুনে হতবাক হয়ে যান মেহবুব। এমআরআই বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, দু’বছরের আগে এমআরআই করা সম্ভব নয়। এর পরই আদালতের দ্বারস্থ হন মেহবুব।

মেহবুব বলেন, “আমি এক বছর আগে পড়ে গিয়েছিলাম। ব্যাথা হলেও খুব একটা বেশি গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু যখন ব্যথা বাড়তে থাকে, আমি লোকনায়ক হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেখাই এবং গত তিন মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিলাম। আমাকে অবিলম্বে অস্ত্রোপচার করতে বলা হয়। কিন্তু যখন হাঁটুর এমআরআই করতে গেলাম তখন আমাকে জানানো হয় ২০২৪-আর আগে এমআরআই করা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় আমি আমার পরিবারের জন্য কীভাবে উপার্জন করব?” ১২ ডিসেম্বর মেহবুবের হয়ে দিল্লি হাইকোর্টে পিটিশন জমা দিয়েছেন আইনজীবী অশোক আগরওয়াল। তিনি জানান, হাসপাতালের পক্ষ থেকে মেহবুবকে বেসরকারি ল্যাবরেটরি থেকে এমআরআই করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মেহবুব জানিয়ে দেন, বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে এমআরআই করার সামর্থ্য তাঁর নেই।

লোকনায়ক হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা এই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তবে হাসপাতালের এক জন বর্ষীয়ান চিকিৎসক জানিয়েছেন, প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে হাসপাতালে এমআরআইয়ের জন্য দুই থেকে তিন বছর অপেক্ষা করা ‘স্বাভাবিক’।

তিনি বলেন, “এ ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য নেই। লোকনায়ক হাসপাতেলে প্রতি দিন হাজার হাজার রোগী আসেন। পরীক্ষার জন্য গড় অপেক্ষার সময় দুই থেকে তিন বছর এবং কিছু ক্ষেত্রে তা পাঁচ বছর পর্যন্ত। এই কারণেই জরুরী ক্ষেত্রে, আমরা রোগীদের তাদের সামর্থ্য থাকলে বেসরকারি ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করার পরামর্শ দিই যাতে তাদের চিকিত্সা প্রক্রিয়াতে দেরি না হয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.