২৪ উইকেট নেওয়ার বিপদ! বিশ্বকাপের সফলতম বোলার শামির আর হয়তো বিশ্বকাপই খেলা হবে না

বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের প্রথম একাদশের পরিকল্পনায় ছিলেন না মহম্মদ শামি। কারও চোট লাগলে পরিস্থিতি সামলাতে তাঁকে মাঠে নামানোর কথা ভেবেছিলেন রাহুল দ্রাবিড়েরা। যেমন ভাবা তেমন কাজ। চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হার্দিক পাণ্ড্য চোট পাওয়ায় পঞ্চম ম্যাচে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলার জোরে বোলার। তার পর আর তাঁকে প্রথম একাদশের বাইরে রাখার সাহস পাননি রোহিত শর্মারা।

সাতটি ম্যাচ থেকে ২৪টি উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়েছেন শামি। তিনটি ম্যাচে নেন পাঁচটি বা তার বেশি উইকেট। ক্রিকেট মহলে নতুন করে আলোচনায় উঠে আসেন বাংলার জোরে বোলার। এটাই কি কাল হল শামির? অতিরিক্ত ধকল পড়ে গেল শরীরের উপর? কারণ চোট পেয়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অনিশ্চিত। ফলে বিশ্বকাপ মিটতেই তিনি ভারতের সাদা বলের ক্রিকেটের পরিকল্পনার বাইরে!

বিশ্বকাপে গোড়ালিতে চোট পেয়েছেন ৩৩ বছরের ক্রিকেটার। আপাতত তাই তিনি মাঠের বাইরে। সম্ভবত দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ় খেলতে পারবেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পরিকল্পনাও তেমন। আসলে শামিকে বোর্ডের পরিকল্পনাতে এখন মূলত লাল বলের ক্রিকেট। বিশ্বকাপের আগেও সাদা বলের ক্রিকেটে খুব বেশি সুযোগ পেতেন না শামি। দলে থাকলেও সাজঘরে বসেই তাঁকে অধিকাংশ ম্যাচ দেখতে হত। বোর্ড চায় তাঁকে টেস্ট ক্রিকেটে সব সময় সম্পূর্ণ ফিট অবস্থায় পেতে। তাই সাদা বলের ক্রিকেটের পরিকল্পনায় তাঁকে আর না-ও রাখা হতে পারে।

ভারতীয় বোর্ড সূত্রে খবর, এখনই শামিকে সাদা বলের ক্রিকেটে খেলানো হবে না। সামনে সাতটি টেস্ট ম্যাচ রয়েছে ভারতের। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দু’টি এবং দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচটি টেস্ট রয়েছে। বিশ্বকাপের পর বোর্ড কর্তা মনে করছেন, ভারতীয় উপমহাদেশের পিচে টেস্ট ক্রিকেটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন বাংলার জোরে বোলার। তাই শামির চাপ সীমিত রাখতে তাঁকে শুধু লাল বলের ক্রিকেটে খেলানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এখনই অবশ্য সাদা বলের ক্রিকেট থেকে শামিকে একদম দূরে রাখতে চাইছেন না বোর্ড কর্তারা। সামনের বছর জুন মাসে হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এক দিনের বিশ্বকাপে ভারতকে ফাইনালে তোলার অন্যতম কারিগরকে দেখে নেওয়া হবে আইপিএলে। গুজরাত টাইটান্সের হয়ে তাঁর পারফরম্যান্স দেখার পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। চার বছর পর শামির পক্ষে এক দিনের বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা কম। তাঁর সামনে বিশ্বপর্যায়ের সাদা বলের প্রতিযোগিতা বলতে আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তাই তাঁকে মূলত টেস্ট ক্রিকেটের জন্য ভাবা হচ্ছে।

পর পর দু’বার টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি ভারত। সেই আক্ষেপ মেটাতে টেস্ট ক্রিকেটকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছেন বোর্ড কর্তারা। সেই পরিকল্পনার কেন্দ্রে থাকছেন বাংলার জোরে বোলার। যদিও সাদা বলের ক্রিকেট শামির পরিসংখ্যান যথেষ্ট ভাল। দেশের হয়ে ১০১টি এক দিনের ম্যাচ খেলে ১৯৫টি উইকেট নিয়েছেন। এক দিনের বিশ্বকাপে ভারতীয়দের মধ্যে সব থেকে বেশি ৫৫টি উইকেটও তাঁর ঝুলিতে। এ ছাড়া ২৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২৪টি উইকেট পেয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.