লোক সভায় পেশ হয়ে গেল বিতর্কিত দিল্লি পরিষেবা (সার্ভিসেস) বিল। মঙ্গলবার বিলটি পেশ করেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। যদিও বিতর্কিত বিলটি সংসদে পেশ করতে দেওয়াতেই আপত্তি জানিয়েছিল বিরোধীরা। অধীর চৌধুরী, সৌগত রায়রা একসাথে দাবি জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন কোনো বিষয়ে এভাবে সংসদে বিল আনা যায় না। অধীর চৌধুরী দাবি করেছিলেন, এভাবে সুপ্রিম কোর্টের রায় অগ্রাহ্য করে একটি রাজ্য নিয়ে সংসদে আইন তৈরি করাটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত। কিন্তু সেই আপত্তি উড়িয়ে দিয়ে আসরে নামেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, সংবিধান আমাদের অধিকার দিয়েছে দিল্লি নিয়ে এই সদনে আইন তৈরি করার। তাই এই বিল পেশে কোনো বাধা থাকার কথা নয়।
অমিত শাহ বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছে, দিল্লি রাজ্য সম্পর্কিত যে কোনো আইন আনতে পারে সংসদ। এই সম্পর্কিত সমস্ত আপত্তি রাজনৈতিক। দয়া করে আমাকে এই বিল আনার অনুমতি দিন।” এরপরই স্পিকার বিল পেশের অনুমতি দেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বিলটি পেশ করতেই বিরোধীদের হট্টগোলের জেরে অধিবেশন বেলা তিনটে পর্যন্ত মুলতবি হয়ে যায়। বুধবার বিলটি নিয়ে আলোচনা হবে সংসদের নিম্নকক্ষে।
তবে তার মধ্যে সরকারের পক্ষে বড় স্বস্তির খবর দিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর নবীন পট্টনায়ক। দিল্লি পরিষেবা বিল নিয়ে তারা সরকারের পাশে থাকবেন। কিছুদিন আগে নবীন পট্টনায়ককে বিরোধী শিবিরে আনার চেষ্টা হয়েছিল। আরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজে নবীনের কাছে গিয়ে আবেদন করেছিলেন এইক্ষেত্রে সরকারের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। কিন্তু কিছুই কাজ দিল না। মোদীকেই সমর্থনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী।
বিরোধী জোটের এই বিলকে রাজ্যসভায় আটকে দেওয়াই অন্যতম লক্ষ্য ছিল। কিন্তু নবীনের দল বিজেডি যদি কেন্দ্র সরকারকে সমর্থন করে তাহলে সেই ছক বিফলে যাবে বিরোধীদের। ইতিমধ্যেই সরকারকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে ওয়াই এস আর কংগ্রেস পার্টি। ফলে এই দু’ দলের সমর্থনে অনায়াসে বিলটি রাজ্য সভায় পাস করিয়ে নিতে পারবে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, দিল্লি সরকারের আমলাদের নিয়োগ এবং বদলি সম্পর্কে ইতিমধ্যে কেন্দ্র যে অধ্যাদেশ জারি করেছে সেই অধ্যাদেশকে প্রতিস্থাপন করতে এই বিল আনা হয়েছে। এই বিল আইনে পরিণত হলে দিল্লির সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও বদলি সংক্রান্ত সুপারিশে চূড়ান্ত সম্মতি দেওয়ার ক্ষমতা পাবেন দিল্লির উপ রাজ্যপাল।