তিলজলা কান্ডে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক, এই মর্মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। একই সঙ্গে চিঠিতে কলকাতা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি সাংসদ।
বালিগঞ্জ, তিলজলা সহ দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সৌমিত্র চিঠিতে। তাঁর অভিযোগ, ১০ ঘণ্টায় বেশি সময় ধরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে। ৫ ঘণ্টারও বেশি সময় সংশ্লিষ্ট এলাকায় রেলপথ, সড়ক পথ অবরুদ্ধ। উত্তেজনা ছড়িয়েছে বিভিন্ন প্রান্তে। প্রধানমন্ত্রীকেও বিজেপি সাংসদরা এই বিষয়টি জানাবেন বলে খবর।
চিঠিতে সৌমিত্র জানিয়েছেন, তিলজলায় সাত বছরের নাবালিকাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ প্রথমে অভিযোগ নিতে চায়নি, সময় নষ্ট করেছে। এরপর তল্লাশি শুরু করে নাবালিকার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হওয়ার পরও কলকাতা পুলিশ ঘটনাটা ধামাচাপা দিতে চায় বলে অভিযোগ। কলকাতায় রাষ্ট্রপতির উপস্থিতির কথাও চিঠিতে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ। চিঠিতে রাষ্ট্রপতির সুরক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। টুইটারে তিনি লিখেছেন, তিলজলার ভয়াবহ ঘটনাটি হাড় হিম করা এবং বেদনাদায়ক। পুলিশি ব্যর্থতার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর অযোগ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে। যে সরকার পশ্চিমবঙ্গের মেয়েদের রক্ষা করতে পারে না তার ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করে টুইট করেছেন বিজেপির মুখপাত্র অমিত মালব্য। তিনি লিখেছেন, কলকাতা আবারও জ্বলছে। এক সাত বছরের মেয়ের মৃত্যু ঘিরে প্রতিবাদ চলছে। সরকার এই ঘটনায় চুপ থাকার চেষ্টা করছে।
প্রসঙ্গত, ৭ বছরের এক নাবালিকার নৃশংস হত্যাকে কেন্দ্র করে রবিবার থেকে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে তিলজলা এলাকা। রবিবার রাতেই পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে তিলজলা থানা ঘেরাও করে ঐ নাবালিকার প্রতিবেশীরা। পুলিশের বিরুদ্ধে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ করতে থাকেন তারা। থানার গেট ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় চলে ইট বৃষ্টি। সোমবার সকালে বিক্ষোভ বেড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে বন্ডেল গেট রেল অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা, পরে বন্ডেল গেট এলাকায় রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানান, এই ঘটনার জেরে পার্ক সার্কাসে প্রায় সোয়া দু’ঘণ্টায় পনেরোটি লোকাল ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে আপ ডাউন মিলিয়ে। সপ্তাহের প্রথম দিনে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা।