বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। এদিকে সামনেই মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। সেই সবদিক মাথায় রেখেই রান্নার গ্যাসের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে মাঠে নামলো মোদী সরকার। সূত্রের খবর, রান্নার গ্যাসের দাম কমানোর ভাবনা শুরু করেছে কেন্দ্র। গত চার মাস ধরে পেট্রোল-ডিজেলের দাম ওঠানামা করেনি।
রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের আকাশ ছোঁয়া দামে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। আর সেটা নিয়েই মোদী সরকারকে নিশানা করছে বিরোধীরা। নির্বাচনী প্রচারে বিরোধীদের অন্যতম ইস্যু রান্না গ্যাসের দামবৃদ্ধি। ফলে সব দিক বিবেচনা করে রান্না গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম কমানোর বিবেচনা করতে শুরু করেছে মোদী সরকার বলে খবর। ভোটের কথা ভেবে পেট্রোল-ডিজেলের দামেও কিছুটা লাগাম টানার কথা ভাবছে কেন্দ্র। মোদী সরকার পেট্রোল-ডিজেলের উৎপাদন শুল্ক কমানোর পথেও হাঁটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম আজ বহুদিন ধরেই এগারোশো টাকার বেশি। বিজেপির রাজ্যস্তরের নেতারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, এই দাম বৃদ্ধির কারণে মোদী সরকারের বিশ্বস্ত মহিলা ভোটব্যাংক কিছুটা হলেও বিরক্ত। এদিকে রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার ৫০০ টাকা দামে গ্যাস সিলিন্ডার দিচ্ছে। মধ্যপ্রদেশেও কংগ্রেস ক্ষমতা এলে একই দামে সিলিন্ডার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কংগ্রেস। তাই কর্ণাটক হাতছাড়া হবার পর রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় তেলেঙ্গানা সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট ও আগামী বছরের লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই গ্যাসের দাম কমানোর ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে মোদী সরকার বলে খবর।
গত তিন বছরে রান্নার গ্যাসের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দামের সঙ্গে সাযুজ্য রাখেই গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ঠিক হয়। দেশে প্রয়োজনের প্রায় ৬০ শতাংশ এলপিজি বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। গত কয়েক বছরে রান্নার গ্যাসের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার ফলে বিজেপি নেতৃত্ব মন মনে হয়েছে, রাজনৈতিক আঙিনাতেও তার প্রভাব পড়ছে। কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলি ভর্তুকি গুনে ৫০০ টাকা দামে মেসিলিন্ডার দিতে শুরু করায় চাপ বেড়েছে বিজেপির ওপরে। খয়রাতি রাজনীতির বিরুদ্ধে সওয়াল করলেও গ্যাস ও পেট্রোল, ডিজেলের দাম বাড়ায় বিরক্ত সাধারণ মানুষ।
রান্নার গ্যাসে নামমাত্র ভর্তুকি দেয় এখন মোদী সরকার। শুধুমাত্র উজ্জ্বলা যোজনায় সাড়ে ৯ কোটি মত পরিবারকে বিনামূল্যে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য সিলিন্ডার পিছু ২০০ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়। তারপরেও দরিদ্র পরিবার গুলিকে ৯০০ টাকার বেশি দিতে হচ্ছে সিলিন্ডার পিছু। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী সরাসরি দাম কমানোর কথা না বললেও দাবি করেছেন আমজনতার বোঝা কমাতে মোদী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।