বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা বিএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) এবং তাঁর ডেপুটি তথা স্পেশাল ডিরেক্টর জেনারেলকে (পশ্চিম) পদ থেকে সরিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই পদক্ষেপকে নজিরবিহীন বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। কারণ, গত ১০ বছরেও কোনও বিএসএফ শীর্ষকর্তার বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি সরকারকে। জম্মু ও কাশ্মীরের আন্তর্জাতিক সীমানা পেরিয়ে বার বার জঙ্গি অনুপ্রবেশ এবং উপত্যকায় অশান্তির কারণে এই পদক্ষেপ হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
ADVERTISEMENT
বিএসএফের ডিজির পদে ছিলেন নীতিন আগরওয়াল। তিনি গত বছরের জুন মাসে ওই পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। সময়ের আগেই তাঁকে অপসারিত করে রাজ্য স্তরের ক্যাডারে ফেরত পাঠানো হল। অন্য দিকে, স্পেশাল ডিজি (পশ্চিম) পদে এত দিন ছিলেন ওয়াইবি খুরানিয়া। তাঁকেও রাজ্যে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
১৯৮৯ সালের কেরল ক্যাডারের আধিকারিক ছিলেন নীতিন। খুরানিয়া ছিলেন ১৯৯০ সালের ওড়িশা ক্যাডারে। দু’জনকেই সময় শেষ হওয়ার আগেই পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। শুক্রবার পৃথক ভাবে দু’টি বিজ্ঞপ্তিতে সেই নির্দেশিকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। দ্রুত এই নির্দেশ কার্যকর করতেও বলা হয়েছে।
বিএসএফের দুই শীর্ষকর্তার বিরুদ্ধে কেন আচমকা এই পদক্ষেপ? অনেকে বলছেন, নেপথ্যে রয়েছে কাশ্মীরে তাঁদের ব্যর্থতা। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দেশে তৃতীয় বার বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছিলেন, কাশ্মীরে শান্তিরক্ষায় তারা বদ্ধপরিকর। শক্ত হাতে সেখানে সন্ত্রাস দমন করা হবে বলেও জানিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু নতুন সরকার গঠনের পর থেকে বার বার কাশ্মীরের শান্তি বিঘ্নিত হয়েছে। জম্মুতে বাসে জঙ্গি হানায় প্রাণ গিয়েছে অনেক পুণ্যার্থীর। বার বার কাশ্মীরের সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশ এবং সেনা জওয়ানদের সঙ্গে গুলির লড়াইও হয়েছে। গত দু’মাসে যেন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বেড়ে গিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ফোর্সের মধ্যে ওঁদের দখল মজবুত ছিল না। বিএসএফের অন্যান্য শাখা সংস্থার সঙ্গেও বোঝাপড়ার অভাব ছিল। সেই কারণেই এই অপসারণ বলে মনে হচ্ছে। সীমান্ত সুরক্ষাকে কেন্দ্রীয় সরকার যে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, এই পদক্ষেপ থেকে সেই বার্তাও দেওয়া হল।’’
কাশ্মীরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংঘাত, জঙ্গি অনুপ্রবেশ এবং সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে বিএসএফের শীর্ষকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ আগে করা হয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না কেউ। ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় হামলার সময়েও এমন কিছু করেনি কেন্দ্র।