“এক দেশ এক ভোট” কোবিন্দ নেতৃত্বাধীন কমিটিতে অমিত শাহ, অধীর চৌধুরী সহ ৭ জনের নাম ঘোষণা কেন্দ্রের

এক দেশ এক ভোট নীতি রূপায়নের জন্য যে কমিটি গঠিত হয়েছে তাতে কারা কারা থাকছেন শনিবার সেই তালিকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্র সরকার। এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ যা আগেই জানা গিয়েছিল। রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে আরো সাতজনকে নিয়ে এই কমিটি গঠন হয়েছে।

এই কমিটিতে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী, গোলাম নবী আজাদ, এন কে সিং, সুভাষ সি কাশ্যপ, হরিশ সালবে, সঞ্জয় কোঠারি। এক দেশ এক ভোট রূপায়ণ কমিটিতে আটজনের এই সদস্য থাকছেন।

অমিত শাহ ও অধীর চৌধুরী ছাড়া কমিটির বাকি সদস্যদের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গোলাম নবি আজাদ ২০২২ সালে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে ডেমোক্রেটিভ প্রোগ্রেসিভ আজাদ পার্টি গঠন করেন। এন কে সিং ২০১৪ সাল থেকে বিজেপিতে আছেন। এর আগে তিনি বিহার থেকে রাজ্যসভায় জনতা দলের সাংসদ ছিলেন। সুভাষ সি কাশ্যপ লোকসভা সচিবালয়ের প্রাক্তন সদস্য, হরিশ সালবে দেশের প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল, সঞ্জয় কোঠারি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় ভিজলেন্স কমিশনার। কমিটির নেতা হিসেবে রামনাথ কোবিন্দের নাম শুক্রবারে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র সরকার। শনিবার কমিটির বাকি সদস্যদের নামও প্রকাশ্যে এলো।

লোকসভা ভোটের আগে “এক দেশ এক ভোট নীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে তৎপরতা শুরু করেছে মোদী সরকার। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ দিনের জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার কথা ঘোষণা করেছেন। সেখানে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পাশাপাশি এক দেশ এক ভোট সংক্রান্ত বিল পাস করানো হতে পারে বলে জল্পনা তুঙ্গে। এই অধিবেশনে কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি রিপোর্ট পেশও করতে পারে। এক দেশ এক ভোট নীতি কার্যকর করার মাধ্যমে লোকসভা ভোটের সঙ্গে সব রাজ্যের বিধানসভা ভোটও সেরে ফেলতে চাইছে কেন্দ্র সরকার। এক্ষেত্রে তাদের যুক্তি, এতে ভোটের খরচ কমবে। একটি ভোটার তালিকাতে দুটি নির্বাচন হওয়ায় সরকারি কর্মীদের তালিকা তৈরির কাজের চাপ কমবে। ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির জন্য বারবার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে যাবে না। নীতি আয়োগ, আইন কমিশন, নির্বাচন কমিশন নীতিগতভাবে এই ভাবনাকে সমর্থন জানিয়েছে বলে কেন্দ্র দাবি করেছে। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরই মোদী এক দেশ এক ভোটের পক্ষে সওয়াল করা শুরু করেছিলেন।

বিরোধীরা যদিও প্রথম থেকেই এর বিরোধিতা করেছেন। তাদের মতে এই নীতির মাধ্যমে আসলে মোদী সরকার ঘুরপথে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ধাত চালু করতে চাইছে। তাদের অভিযোগে, এই ভাবনা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থী। বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির আশঙ্কা এক দেশ এক ভোট নীতি কার্যকর হলে লোকসভার ঢেউতে বিধানসভা গুলি ভেসে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সাংসদ ও বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেটুকু বৈচিত্রের সম্ভাবনা রয়েছে তাও ভেঙে পড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.