পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নির্জন ফরেস্টে বিজেপির বুথ সভাপতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে রহস্য। খুনের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন মৃতের পরিবার। ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছে বিজেপির জেলা সভাপতি। একই অভিযোগ তুলে টুইট করে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতিও। মঙ্গলবার এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় বালুরঘাট ব্লকের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাইবাড়ি এলাকায়। যদিও তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই যুবকের নাম সমীর পাহান ওরফে মংলু। বিজেপির ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭৫ নম্বর বুথের বুথ সভাপতি ছিলেন। পেশায় দিনমজুরের কাজ করতেন তিনি। এদিন বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি নির্জন ফরেস্টে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখেন স্থানীয়রা। যে খবর পেয়েই এলাকায় পৌঁছে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
এদিকে একাকি রোজগেরে পরিবারে ওই যুবকের এমন রহস্য মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছে বৃদ্ধ মা। তার ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন বৃদ্ধা। একই অভিযোগ তুলেছে প্রতিবেশীরাও। তাদের দাবি, মংলু কোনোদিনই আত্মহত্যা করতে পারে না। কেউ বা কারা তাকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরে নানা হুমকি ও শাসানি দিয়ে চলেছিলেন শাসক দলের কিছু লোকজন। যে কথা মংলু দলকেও জানিয়েছিল।
একই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তার অভিযোগ, তাদের বুথ কর্মীকে খুন করা হয়েছে ঠান্ডা মাথায়। যা নিয়ে এদিন টুইটও করেছেন সুকান্ত মজুমদার। যদিও এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। তাদের দাবি, ঘটনার পিছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা উদ্ধার হবে। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে খুনের অভিযোগ তুলে বালুরঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতর পরিবার।
মৃতের মা বিষদ মুনি পাহান বলেন, এদিন সকালে ঘটনার খবর পেয়েই আঁতকে উঠেছেন। তার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সঠিক তদন্ত করুক।
অনু পাহান ও সুইমণি পাহানরা বলেন, মংলু আত্মহত্যা করতে পারে না। ঘটনার পিছনে রহস্য রয়েছে। পুলিশ সঠিক তদন্ত করুক।
বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সভাপতি শুভ চক্রবর্তী বলেন, বেশকিছুদিন ধরে তাকে শাসানি দিচ্ছিল শাসক দলের নেতারা। তাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, তাদের বুথ সভাপতিকে খুন করা হয়েছে। ঘটনার পিছনে যে তৃণমূলের লোকই থাক না কেন তাকে খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা তারা করবেন।
তৃণমূল নেতা সুভাষ চাকি বলেন, খুনের রাজনীতিতে তৃণমূল বিশ্বাসী নয়। পুলিশ তদন্ত করলেই এর প্রকৃত কারন বেরিয়ে আসবে।