‘আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ফাইনাল এই দশকের অন্যতম সেরা ম্যাচ হতে চলেছে’, বলছেন ডগলাস

কাতার বিশ্বকাপের বিস্ফোরক ফাইনালে মুখোমুখি আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। কেমন হবে সেই ম্যাচ? শেষ হাসি তোলা থাকবে কার জন্য? মেসি নাকি এমবাপে? মেগাফাইনালের বিশ্লেষণে তিন প্রধানের প্রাক্তন ফুটবলার ডগলাস দ্য সিলভা। 

বিশ্বকাপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচ শুরু হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। গোটা বিশ্বের চোখ লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপের দিকে। ফুটবল অনুরাগী হিসেবে এবং সুন্দর ফুটবলের একজন পূজারী হিসেবে আমি চাই ফাইনাল জিতুক আর্জেন্টিনা। কাপ উঠুক লিওনেল মেসির হাতে।

এটাই শেষ বিশ্বকাপ মেসির। টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনার শুরুটা কীরকম হয়েছিল একবার ভেবে দেখুন। সৌদি আরবের কাছে প্রথম ম্যাচেই হার মানে নীল-সাদা জার্সিধারীরা। তার পরে আর্জেন্টিনা যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয় ওদের জন্য। প্রতিটি ম্যাচে উন্নতি করেছে স্কালোনির ছেলেরা। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে মেসি অন্যতম সেরা ম্যাচটা খেলেছে। তবে ফাইনাল ম্যাচ তো আর পাঁচটা ম্যাচের মতো নয়। এই ম্যাচে টেনশন কাজ করে, চাপ থাকে, গোটা দেশের প্রত্যাশা কাঁধে নিয়ে নামতে হয়। কিন্তু বিশ্বকাপ ফাইনাল এমন এক মঞ্চ যেখানে জ্বলে ওঠে সর্বোচ্চ পর্যায়ের পারফরমাররা। মেসি ও এমবাপে এই সুযোগ হাতছাড়া করবে না। 
এমবাপে ফুটছে। মাত্র ২৩ বছর বয়স। আর এই বয়সেই পরপর দু’ বার বিশ্বকাপ জেতার হাতছানি এমবাপের সামনে। দারুণ ছন্দে রয়েছে ও। পাঁচ-পাঁচটা গোল ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে।এমবাপেকে নিয়ে সব সময়ে ব্যস্ত থাকতে হয় প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের। ফাইনালে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগের পরীক্ষা নেবে এমবাপে।

মেসি এবার অনন্য ফর্মে রয়েছে।ওর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে পাঁচটা গোল। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে মেসির অ্যাসিস্টটা দীর্ঘকাল মনে থাকবে ফুটবল বিশ্বের। সব দিক থেকে বিচার করে বলব, এমবাপেকে ফ্রান্সের যতটা দরকার তার থেকেও মেসিকে বেশি দরকার আর্জেন্টিনার। মেসিই এই আর্জেন্টিনা দলটার চালিকাশক্তি। মেসিই দলটার মস্তিষ্ক। ওর জন্যই দলের বাকিরা নিজেদের নিংড়ে দিচ্ছে। জেতার জন্য ঝাঁপাচ্ছে। এই আর্জেন্টিনা শুধু একজনের উপরে নির্ভরশীল নয়।

ফাইনাল ম্যাচে ক’টা গোল হবে, সেই ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব নয়। ম্যাচে গোল হবে। খুব একটা বেশি হবে বলে মনে হয় না। মেসি-এমবাপের উপস্থিতি ম্যাচটার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। 

ফরাসি শিবিরের একাধিক প্লেয়ার ফ্লুয়ে আক্রান্ত। বিশ্বকাপের আগে থেকে চোটআঘাত সমস্যা ওদের ভোগাচ্ছিল। শেষ ল্যাপে এসে ফ্লু-আতঙ্ক। আর্জেন্টিনা এর সুযোগ নিতে চাইবে। আর্জেন্টিনাকে থামাতে হলে মেসির দিকে কড়া নজর রাখতে হবে। সেই সঙ্গে  নীল-সাদা ব্রিগেডের বাকিদের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। আমি নিশ্চিত এমবাপের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা করে রেখেছে স্কালোনি। গ্রিজম্যানকে লিঙ্কম্যান হিসেবে খেলাচ্ছেন দেশঁ। আর এই ভূমিকায় দারুণ সফল গ্রিজম্যান। সব মিলিয়ে দুই দলেই রয়েছে দুর্দান্ত সব ফুটবলার। একটা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। আর তা হল আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ফাইনাল এই দশকের অন্যতম সেরা ম্যাচ হতে চলেছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.