শিক্ষার কোন বিকল্প হয় না এ কথা আমরা সকলেই জানি। একটু পড়াশোনা শেখার জন্য কত না কষ্ট করে মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে শহরে কষ্ট করে পড়তে আসে ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য। যারা পড়াশোনা শিখতে পারেননি তাদের মধ্যে এখনও অনেকে আক্ষেপ করেন একটু যদি পড়াশোনার সুযোগ পেতাম ছোটবেলায় তাহলে আজ হয়তো জীবনটা অন্যরকম হতো।
শিক্ষিত দেশ ও দশকে উন্নতির পথে নিয়ে যায়। শিক্ষিত জাতি থাকলে তবেই তো দেশ বিশ্বে নাম উজ্জ্বল করবে। এই শিক্ষার গুরুত্ব খুব সহজেই অনুধাবন করতে পেরেছেন এই চা বিক্রেতা পি ভি চিন্নাথাম্বি। কেরলের ইদুক্কি জেলায় নিজের চায়ের দোকানে তিনি খুলে ফেলেছেন আস্ত একটি লাইব্রেরি। তিনি শিক্ষক পি কে মুরলীধরন এই লাইব্রেরি খোলার উদ্যোগ নেন।
২০১০ সালে কেরলের ইদুক্কি জেলার এদুমালাক্কাডি গ্রামে প্রথম পঞ্চায়েত গঠিত হয়। সেই বছরই এই দুইজন মিলে এলাকার মানুষকে শিক্ষিত করার মহান কর্মযোগে সামিল হন। শিক্ষক মুরলিধরন আজ থেকে দুই দশক আগে ওই গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন এবং তার উদ্দেশ্য ছিল আদিবাসীদের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার ঘটানো। তার এই উদ্দেশ্যের দিকে চোখ পড়ে ওই চা বিক্রেতার। তখনই দুজন মিলে পরিকল্পনা করেন কীভাবে আদিবাসী মানুষকে শিক্ষিত করা যায়। আদিবাসী মানুষজনকে বোঝানোর চেষ্টা হয় বই পড়ার উপকারিতা সম্পর্কে। একরকম জোর করেই তারা এই কাজটি শুরু করেন। এরপর অসাধ্য সাধন হয় যখন চায়ের দোকানে লাইব্রেরি খুলে ফেলেন তারা। ধীরে ধীরে বই পড়ায় আগ্রহ বাড়ে গ্রামের আদিবাসীদের এবং এই মহৎ কর্ম যজ্ঞের কথা জানতে পেরে বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে এসে বই দিয়ে গিয়েছেন এই লাইব্রেরীতে। এখন এই চায়ের দোকানে গমগম করে চলছে পড়াশোনা। গ্রামকে শিক্ষার আলো দেখাচ্ছেন এক শিক্ষক এবং এক চা ওয়ালা।