দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ২০ হাজারের বেশি গাড়ির ট্যাক্স ফেল। ১ হাজারের বেশি গাড়ির পারমিট নেই। এছাড়াও ২ হাজারের বেশি গাড়ির ফিটনেস নেই। ফলে নিয়ম বহির্ভূতভাবেই জেলাজুড়ে চলছে বহু গাড়ি। গাড়ির ট্যাক্স বাবদ সরকারি দফতরের কোষাগারে শুধুমাত্র জেলাতেই বকেয়া ৫ কোটি টাকারও বেশি।
খোদ জেলা আঞ্চলিক পরিবহন দফতরের আধিকারিক সুজয় সাধু সহ অন্যান্য আধিকারিকরা বালুরঘাট থেকে কুশমন্ডি, হরিরামপুর থেকে হিলি চষে বেড়াচ্ছেন, চলছে প্রচার। বাস লরি ও অন্যান্য যানবাহনের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করছেন। সরকারের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট তারিখের আগে যদি ট্যাক্স সহ অন্যান্য কাগজপত্র ঠিক করে নেওয়া হয়, তাহলে জরিমানাও লাগবে না বলে প্রচার করছে পরিবহন দফতর। কিন্তু পরিস্থিতির তেমন কোনও বদল হচ্ছে না বলেই দফতর সূত্রে খবর। অন্যদিকে গাড়ি মালিকরাও অসহায় নানা কারণে। বিপুল সংখ্যার এই ট্যাক্স আদৌ কবে ঘরে উঠবে বা কতটা তোলা সম্ভব হবে তা নিয়েও সন্দিহান রয়েছেন দফতরের শীর্ষ আধিকারিক থেকে শুরু করে সরকারি আমলারা।
এই বিষয়ে বালুরঘাট আঞ্চলিক পরিবহন দফতরের আধিকারিক সুজয় সাধু বলেন, জেলায় ২০ হাজারের বেশি গাড়ির ট্যাক্স ফেল। ১ হাজার গাড়ির পারমিট ফেল এবং আরও প্রায় ২ হাজার গাড়ির ফিটনেস নেই। এই গাড়িরগুলিকে জরিমানাও করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষিত একটি নতুন প্রকল্প চালু হয়েছে। ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ট্যাক্স দিলে জরিমানা লাগবে না। এছাড়াও ৩১ জানুয়ারির মধ্যে পারমিট ও ফিটনেস করালে সেক্ষেত্রে জরিমানায় ১০০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। শুধু ট্যাক্স বাবদ বকেয়া পড়ে রয়েছে ৫ কোটি টাকারও বেশি। বালুরঘাট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মানস চৌধুরী এপ্রসঙ্গে দাবি করেন, জেলার বেসরকারি পরিবহনের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গীন। কারণ ভাড়া বৃদ্ধি হয়নি। অন্যদিকে টোটোর অত্যাচার। সব মিলিয়ে বেসরকারি পরিবহনের অবস্থা ভালো নয়। সেই কারণেই বেশ কিছু গাড়ির মালিক তাদের গাড়ি চালানো-ই বন্ধ করে দিয়েছে। যে সমস্ত গাড়িগুলো চলছে, তাদের কাগজপত্র ঠিকঠাক আছে বলেই আমরা জানি।
পরিবহন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রায় ৪০ হাজারের বেশি যানবাহন রয়েছে। বাস, লরি, ট্রাক, ট্রাক্টর, অটো, ছোট গাড়ি বাইক সহ নানা গাড়ি রয়েছে। ওই সংখ্যার ৫০ শতাংশ যানবাহনের ট্যাক্স মেলে না। ফলে গ্রামগঞ্জের নানা জায়গায় ট্যাক্স ছাড়াই দাপিয়ে বেড়ায় নানা যানবাহন। এমনকি পারমিট ছাড়াই লরি, বাস, অটো সহ নানা যাত্রীবাহী যানবাহন খেয়াল খুশি মতো নানা জায়গায় যাতায়াত করে। জেলা পরিবহণ দফতরের তরফে যা নিয়ে মাঝেমধ্যেই অভিযান চালানো হয়। জরিমানাও করা হয়। বিগত দিনে দেখা গিয়েছে, অনেক বাস, লরি, এমনকি নাইট সার্ভিস বাসগুলিও পারমিট ছাড়াই যাতায়াত করছে। পরিবহণ দফতর যা নিয়ে অভিযানও চালিয়েছে। কিন্তু এরপরও জেলায় ২০ হাজার যানবাহনের ট্যাক্স ফেল। ফলে সরকারের রাজস্ব ফাঁকির পরিমাণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বকেয়া ট্যাক্স উদ্ধার করার জন্য। এমনটাই জানিয়েছেন পরিবহন দফতরের আধিকারিক সুজয় সাধু।