সীজন ১ দেখে বোঝার চেষ্টা করুন যে বিতর্কটি আসল ছিল কি না।
অবশ্যই শুরু হয় একজন হিন্দু প্রধানমন্ত্রীর আদেশে, ৩ জন নিরীহ মুসলিম কর্মীকে হিন্দু পুলিশ অপহরণ করে হত্যা করার মধ্য দিয়ে।
কাকতালীয় না? তাহলে বাদ দিন।
নাম দেবকী নন্দন – মাংস খাচ্ছেন, তার ছেলে হিন্দু ধর্মের নিরামীষভোজীদের মূল্যবোধ নিয়ে মজা করে বলে উঠলো — “ওইসে তো কাম নন-ভেজিওয়ালি করতে হো – কেহনে কো ভেজিটেরিয়ান হো” – আবার ভেবেছেন নিশ্চয় যে এটাও কেবল একটি কাকতালীয় ঘটনা !!
উচ্চবর্ণের হিন্দু একজন দলিতকে উপহাস করছে “তুমহরে বাপ হামরে জোতে বানাতে থে”। হিন্দু- বিভাজন— কাকতালীয়?
‘দেবকী নন্দন’-এর একটি পার্শ্ব সম্পর্ক রয়েছে – অনুরাধা’ – কুমারী মা – নেশাসক্ত পুত্র রঘুর সাথে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে!
পৌরাণিক কাকতালীয় ঘটনা তাই না?
ব্যাপারটা তো একটু সন্দেহজনক।
হিন্দু পুলিশ অফিসার – ঠাকুর – মদের সাথে সোডা মিশিয়ে খেতে খেতে হিন্দি ভাষাকে ব্যাখ্যা করছেন এইভাবে যে “অশ্লীলতা খুব ভালভাবে আড়াল করতে পারে এই ভাষা”
ভাষার উপর আক্রমণ।
কাকতালীয়?
মুসলিম ছাত্রদের উক্তি “হামে মারনা বহুত আসন হোতা হ্যায়” নাম কে সাথ আতঙ্কি লাগা দেতে হ্যায় —‘ইমরান’কে জেলে রাখা হয়েছে।
সানা’র নেতৃত্বে নিরীহ ছাত্র সংগঠন — অবশ্যই শান্তিপূর্ণ সব বিক্ষোভকারী — পুলিশের দ্বারা আহত! সংখ্যালঘু হওয়ায় মুসলমানদের নকল এনকাউন্টারের ছক কষে হত্যা করা হয়।
বার্তা তো একদম পরিষ্কার। তারা শান্তিপ্রিয়।
শুধু কাকতালীয় ব্যাপার প্রচুর!
কিসান সমাবেশে ধর্মীয় দলবাজি – আবারও কাকতালীয় ঘটনা?
শিব- মঞ্চে ত্রিশূল ধরে আছেন — বলেছেন *উব্লুটিএফ এবং অশ্লীলতা ছড়িয়ে দিচ্ছেন – বাহ্ !!
একজন এটা ভেবেই আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছেন যে এই মঞ্চে যদি মহম্মদ থাকতেন— তখন ঠিক কিভাবে এটা হজম করতো?!
নিশ্চয়ই এখনই একটি ফতোয়া জারি করা হবে !!
নারদ বলছেন “নারায়ণ নারায়ণ” এবং তিনি একজন ভাঁড়ের মতো আচরণ করছেন।
হিন্দুরা সেটাও মেনে নেবে কারণ তারা ভীষণ উদার মনের এবং ধর্মনিরপেক্ষ কিনা।
তাদের মধ্যে অনেকেই সত্যিকারের হিন্দু তা প্রমাণ করতে আপত্তি করবে না (কারণ ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা তো হিন্দু মূল্যবোধেরই অংশ)
তারা এইসব ঘটনা এবং বর্ণনার প্রশংসা করবে, বাহবা দেবে কারণ বিজেপি / মোদী / হিন্দুত্ববাদের প্রতি ঘৃণা তাদের অন্ধ করে রেখেছে।
একজন ন্যায়পরায়ন প্রতিবেদকের মতো বরখা দত্ত জানিয়েছেন, জেএনইউ / ভিএনইউ হলো প্রবল ন্যায়নিষ্ঠ সক্রিয় কর্মীদের জায়গা।
ভিএনইউতে স্লোগান
‘মনুবাদ সে আজাদী’
‘মূর্তিবাদ সে আজাদী’
গজনী / তৈমুর / আইকনোক্লাস্টরা কাজগুলো করেছেন কিনা সেই ব্যাপারে কি কোনো সন্দেহ আছে?
সৃজনশীল স্বাধীনতা অবশ্যই ভালো, যদি সেটা সমানভাবে সাম্প্রদায়িক হয় — পাঞ্চিং ব্যাগের মতো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পচে যাওয়া এক সংস্কৃতির কার্যাবলী বারবার পেশ করা হচ্ছে।
সত্যিই কি আপনি মনে করেন যে একজন যদি ‘শরিয়া সে আজাদী’ ‘গ্রন্থ সাহেব সে আজাদী’ ‘বাইবেল সে আজাদী’-র মতো স্লোগান দেয় তাহলে সেটা গ্ৰহণযোগ্য হবে? — কতজন সেকুলার তখন এগিয়ে আসবে এবং বলবে যে এটা কেবল সৃজনশীল স্বাধীনতা।
আমি তৃতীয় পর্বের পরে থামলাম।
এইরকম একটা বিশ্রী, কদর্য নির্মম প্রয়াস যা একটা সংস্কৃতি, ভাষা, চিন্তনের মর্যাদাহানি করতে চেয়েছে তাকে ” ফুল ভিউয়ার্স”-এর তকমা কোনোভাবেই দিতে চাই না।
ধিক্কার নেটফ্লিক্স এবং অ্যামাজন প্রাইম,, এতটা অসংবেদনশীল হওয়ার জন্য !!
ব্যানতান্ডবনাও #ব্যানতান্ডব #আরেস্টমেকারসফটান্ডাভওয়েবসারিজ
- অনিল বাহল