আশঙ্কা ছিল। গোয়েন্দা রিপোর্টেও সতর্ক করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও এড়ানো গেল না বিপদ। মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়ার পাঁচদিন আগে জোড়া আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কাবুলের বিমানবন্দরের বাইরের এলাকা। তার জেরে যে মানুষগুলো আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার জন্য মরিয়া ছিলেন, তাঁদের অনেকেই মারা গেলেন। কেউ আবার আহত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হলেন।
একনজরে দেখে নিন কাবুলের জোড়া বিস্ফোরণ সংক্রান্ত তথ্য –ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
১) দুটি ‘আত্মঘাতী’ বিস্ফোরণ হয়েছে। পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কিরবি টুইটারে বলেছেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে পারছি যে একটি জটিল হামলার কারণে অ্যাবে গেটে (বিমানবন্দরের মূল গেট) বিস্ফোরণ হয়েছে। তার জেরে একাধিক মার্কিন নাগরিক এবং সাধারণ নাগরিক হতাহত হয়েছেন। আমরা নিশ্চিত করতে পারছি যে ব্যারন হোটেলের কাছে বা ব্যারন হোটেলে কমপক্ষে আরও একটি বিস্ফোরণ হয়েছে। যা অ্যাবে গেটের কাছেই।’
একটি সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, কাবুল বিমানবন্দর লাগোয়া একটি খালে দাঁড়িয়েছিলেন অনেকে। গোড়ালি পর্যন্ত জল ছিল। তাতে ঝাঁপ দেয় একজন। তারপরই বিস্ফোরণ ঘটে। যে মানুষরা বিমানে ওঠার আশায় ছিলেন, তাঁরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন।
২) সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কমপক্ষে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। একইভাবে অপর একটি সংবাদসংস্থা আবার জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা ২০ ছুঁয়ে গিয়েছে। আফগান স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিককে উদ্ধৃত করে বিবিসি এবং দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, জোড়া বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
৩) সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, দুই মার্কিন আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মার্কিন বাহিনীর কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১১ জন মার্কিন মেরিন এবং একজন নৌবাহিনী চিকিৎসক ছিলেন। সেইসঙ্গে আরও অনেকে আহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। পেন্টাগনের তরফে জানানো হয়েছে, জোড়া বিস্ফোরণ মার্কিন বাহিনীতেও হতাহতের খবর মিলেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যাটা প্রকাশ করা হয়নি।
৪) সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন আধিকারিকদের দৃঢ় বিশ্বাস যে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে হামলায় হাত আছে ইসলামিক স্টেটের খোরাসান গোষ্ঠীর। যে জঙ্গি গোষ্ঠী হামলা চালাতে বলে মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টেও দাবি করা হয়েছিল। মার্কিন গোয়েন্দাদের সেই অনুমানই সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস।
৫) বিস্ফোরণের নিন্দা করেছে তালিবান। টুইটারে তালিবানের মুখপাত্র সুহেল শাহিন মার্কিন সেনার ঘাড়ে কাবুলের জোড়া বিস্ফোরণের দায় চাপিয়েছে। টুইটারে লিখেছে, ‘কাবুল বিমানবন্দরে সাধারণ মানুষের উপর বোমা হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করছে তালিবান। যা এমন একটি জায়গায় হয়েছে, যেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে মার্কিন সেনা। নিজেদের মানুষের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার দিকে কড়া নজর রেখেছে তালিবান। দুষ্ট চক্রকে কঠোরভাবে দমন করা হবে।’
৬) কাবুলের জোড়া বিস্ফোরণের তীব্র নিন্দা করেছে ভারত। বৃহস্পতিবার রাতের দিকে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ‘আজ কাবুলে বোমা বিস্ফোরণের তীব্র নিন্দা করছে ভারত। সন্ত্রাসবাদী হামলা মৃতদের পরিবারের প্রতি গভীরভাবে সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’