বর্ষার পরেই পূর্ণাঙ্গ খাল সংস্কার সহ বিভিন্ন দাবিতে সোয়াদিঘি খাল সংস্কার সমিতি ও বন্যা প্রতিরোধ কমিটির যৌথ উদ্যোগে ৩ অক্টোবর তমলুকের সেচ দপ্তরের অফিসে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক নিম্নচাপজনিত অতিবর্ষণ ও কংসাবতী ব্যারেজ থেকে একসাথে বিশাল পরিমাণ জল ছাড়ার কারণে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁসাই নদীর পাঁশকুড়া সংলগ্ন চারটি স্থানে নদীবাঁধ ভেঙ্গে পাঁশকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যা প্লাবিত হয়েছে। ওই জলের বিরাট অংশ কোলাঘাট ও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সোয়াদিঘি খাল দিয়ে রূপনারায়ণে বের হচ্ছে। কিন্তু ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই খালটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বন্যার জল ঐ খাল দিয়ে দ্রুত বের হতে পারছে না। এছাড়াও খালের ভেতরে থাকা কচুরিপানা, নলগাছ সহ বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা খালের মূলস্রোতকে আটকে রাখায় জল নিকাশীতে বাধার সৃষ্টি করছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ওই খাল সংলগ্ন দেড়িয়াচক ও ভোগপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার জল নিকাশী ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় বন্যার আগে থেকেই এলাকাটি জলমগ্ন ছিল। সব মিলিয়ে দুই ব্লক এলাকার কয়েক হাজার মানুষ প্রায় ১৫ দিন ধরে জলবন্দি অবস্থার মধ্যে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। এই অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে সোয়াদিঘি খালের নিম্নাংশে জমে থাকা কচুরিপানা, নলগাছ সহ সমস্ত রকম আবর্জনা পরিষ্কার ও জলনিকাশিতে বাধা সৃষ্টিকারী জায়গাগুলিতে জমে থাকা মাটি জেসিবি’র মাধ্যমে তোলার দাবিতে গতকাল বিকেলে “সোয়াদিঘি খাল সংস্কার সমিতি” ও “পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন্যা-ভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটি”র পক্ষ থেকে সেচ দপ্তরের তমলুকের এসডিও’র সাথে দেখা করে এইসব দাবি জানায়। অন্যদিকে উপরোক্ত দাবিতে সেচ দপ্তরের সুপারিনটেন্ডিং এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, তমলুকের মহকুমা শাসক, কোলাঘাট ও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বিডিও’কে স্মারকলিপি দেয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন্যা ভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটি। ফলস্বরূপ অবশেষে আজ খাল সংলগ্ন এলাকায় জমে থাকা ও খালের ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা মাটি তোলা সহ জল নিকাশীতে বাধা সৃষ্টিকারী নলগাছ ও আবর্জনা পরিষ্কারের কাজে হাত দিতে বাধ্য হল সেচ দপ্তর। অনেক দেরিতে হলেও খাল পরিষ্কারের কাজে আজ হাত দেওয়ায় খানিকটা স্বস্তিতে এলাকার বাসিন্দারা।
ওই সংগঠন দুটির পক্ষে মধুসুদন বেরা ও নারায়ণ চন্দ্র নায়ক জানান, অতি সত্বর খালের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সহ বিভিন্ন দাবিতে ৩ অক্টোবর এলাকার দুর্গত মানুষ সেচ দপ্তরের জেলা অফিসে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল হবেন।