রায় ঘোষণা করে বিশেষ নির্দেশিকা জারি সুপ্রিম কোর্টের। ভারতের গর্বের যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাটের ধ্বংসপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে এখনই এই যুদ্ধজাহাজকে ভেঙে ফেলা হবে না। মুম্বইয়ের এক কোম্পানি আইএনএস বিরাটের ধংস্বপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ চেয়ে পিটিশন ফাইল করে। তাদের দাবি ছিল ভারতের এই ঐতিহ্যকে নষ্ট না করে ফেলে যদি মেরিটাইম মিউজিয়াম বানানো যায়,তা ভালো হবে।
এই আবেদনে সায় দিয়ে আইএনএস বিরাটের ধ্বংস প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে ব্রিটিশ নৌবাহিনী থেকে বাতিল হয় এই যুদ্ধজাহাজ। বিক্রি করে দেওয়া হয় ভারতকে। ১৯৮৭ সালে ভারতীয় নৌবাহিনীতে আইএনএস বিরাট নামে যোগ দেয় এই রণতরী। দীর্ঘদিনের টালবাহানার পরে ২০২০ সালে মেটাল স্ক্র্যাপ ট্রেড কর্পোরেশন লিমিটেডের ডাকে ৩৮.৫৪ কোটির বিনিময়ে নিলামে তা কিনে নেয় শ্রীরাম গ্রুপ। মুম্বই থেকে কোচি যাওয়ার পথে শেষবারের মতো নিজের শক্তিতে সমুদ্রে যাত্রা করেছিল আইএনএস বিরাট।
বছরের শেষে তাকে টেনে নিয়ে আসা হয় মুম্বই। আপাতত মুম্বইতেই আরব সাগরের পারে অবসর জীবনটা কাটাবে এই যুদ্ধজাহাজ। প্রথমে ম্যারিটাইম মিউজিয়ামে তা সংরক্ষণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে জানিয়েছিল, ভারতীয় নৌবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৯৮২ সালে ফকল্যান্ড দ্বীপের দখল নিয়ে ইংল্যান্ডের সঙ্গে যুদ্ধ বাধে আর্জেন্টিনার। দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে টানা দশসপ্তাহ যুদ্ধের পর শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ সেনার কাছে আত্মসমর্পণ করে আর্জেন্টিনার সেনাবাহিনী। সেই যুদ্ধে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে রেখেছিল এই যুদ্ধজাহাজই।
বাতিল যুদ্ধজাহাজটিতে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস, থিম পার্ক বিলাসবহুল হোটেল, ক্যাফেটেরিয়া, হেলিপ্যাড, মিউজিয়ম, গ্যালারি তৈরির পরিকল্পনা জানিয়েছিল মহারাষ্ট্র সরকার। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে টাকা তোলা হবে বলেও কথা হয়েছিল। বাতিল যুদ্ধজাহাজকে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করার ঘটনা ভারতে এই প্রথম। সারা পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত মাত্র সাতটি ক্ষেত্রে এই ধরনের রূপান্তর করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। প্রায় ৬১ বছর আগে প্রথম যাত্রা শুরু করেছিল রণতরীটি। ৩০ বছর নৌসেনার সঙ্গে থেকে ২০১৭ সালে অবসর নিয়েছে আইএনএস বিরাট।